রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত নিয়ে কেন এত আলোচনা?

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ইউক্রেনের আগ্রাসনের দুই মাস পর বুধবার শক্তি প্রদর্শন করতে রাশিয়া একটি নতুন পারমাণবিক সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে। সারমাত নামক এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে রাশিয়ার শত্রু পক্ষকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্লেসেটস্ক থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথমবারের মতো উৎক্ষেপণ করে ৬ হাজার কিলোমিটার দূরে কামচাটকা উপদ্বীপে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি পুতিনকে টেলিভিশনে দেখিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সারমাত নিয়ে পুতিন বলেন, নতুন এই ক্ষেপনাস্ত্রে সর্বোচ্চ কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এমনকি এটি যেকোনো অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাভেদ করতে সক্ষম। বিশ্বে এটির কোনো অ্যানালগ নেই এবং খুব সহজেই কারো কাছে থাকবে না। এই অনন্য অস্ত্রটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ জয়ের সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করবে, বাহ্যিক হুমকি থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং যারা উন্মত্ত আক্রমনাত্মক বক্তব্যের উত্তাপে আমাদের দেশকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের জন্য চিন্তার খোরাক হবে। রাশিয়ার ন্যাশনাল ডিফেন্স ম্যাগাজিনের এডিটর-ইন-চিফ ইগর কোরোটচেঙ্কো আরআইএ নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, এটি পশ্চিমের জন্য একটি সংকেত। রাশিয়া এবং এর জনগণের নিরাপত্তার দিকে যদি কেউ আঙ্গুল তুলে তবে সে দেশের ইতিহাসের অবসান ঘটানোর সক্ষমতা আমাদের আছে। সারমাতের নাড়ি-নক্ষত্র ইউক্রেন এবং কাজাখস্তান অঞ্চলের প্রাচীন সারমাতিয়ান যাযাবর সম্প্রদায়ের নামানুসারেই এর নাম সারমাত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদসংস্থা তাস। বাইশ বছর পূর্বে ২০০০ সাল থেকে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ শুরু করে রাশিয়া। এর মাঝে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে এর নকশা ও কৌশল ফলে খরচও বেড়েছে অনেকবার। ২০১৪ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন সারমাত দক্ষিণ মেরু থেকে উত্তর মেরুতে উড়ে যেতে সক্ষম। ১০ টন ওজনের বেশ কয়েকটি পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম দুইশ টন ওজনের এই সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটি। এটি চলার পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম, তাই কোন ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী অস্ত্র দ্বারা ধ্বংস করা কঠিন। এটি তৈরির কাজ ২০১৫ সালে শেষ হলেও পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ বারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এর একটি ‘প্রোটোটাইপ’ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। চলতি বছরের অক্টোবরের দিকে রাশিয়ার মিসাইল রেজিমেন্টকে ক্ষেপণাস্ত্রটি পাঠানোর কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে দেশটির মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা রসকসমসের মহাপরিচালক দিমিত্রি রোগজিন।

Share.