ডেস্ক রিপোর্ট: ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে উভয় দেশ সফর করছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রাশিয়া সফর শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করেছেন। কিয়েভে তার উপস্থিতির মধ্যেই বড় দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়। সংবাদমাধ্যমটির সাংবাদিকরা দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনলেও এর কারণ স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেননি। আর রাশিয়ার পক্ষ থেকেও বিস্ফোরণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অন্যদিকে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রুশ সেনাদের ছোঁড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র কিইভের শেভচেঙ্কো এলাকা প্রকম্পিত হয়েছে এবং একটি রকেট ২৫তলা একটি আবাসিক ভবনের নিচের তলাগুলোতে আঘাত হেনেছে, এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এই বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়ায় পর্তুগিজ গণমাধ্যম আরটিপি-কে গুতেরেস বলেন,‘কিইভে হামলার ঘটনা ঘটেছে, এতে আমি মর্মাহত হয়েছি, এটি এ কারণে নয় যে আমি এখানে আছি কিন্তু কিইভ ইউক্রেইনীয় ও রুশদের কাছে একইভাবে একটি পবিত্র শহর।’ অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই বিস্ফোরণ প্রমাণ করেছে আমাদের সতর্ক প্রহরা বাদ দেওয়া যাবে না। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে এটি যেন আমরা না ভাবি।’ এর আগে মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চল শহর মারিউপোলের দখলীকৃত এলাকায় মানবিক করিডোর স্থাপনে জোর দেন। ওই অঞ্চলে অবস্থিত একটি ইস্পাত কারখানা ঘিরে রেখেছে রুশ বাহিনী। সেখানে প্রায় দুই হাজার বেসামরিক নাগরিক অবস্থান করছে। তাদেরকে আত্নসমর্পণের আহ্বান জানালেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউক্রেন সফর করেন আন্তোনিও গুতেরেস। রাজধানী কিয়েভের নিকটবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রতিক্রিয়ায় আন্তেনিও বলেন,‘যখন আমি ধ্বংসাত্মক ভবনগুলো দেখি, আমার মনে হয় এসব বাড়ির মধ্যে আমার পরিবারের সদস্যরাও রয়েছে। আমি কল্পনায় দেখছি, আমার নাতি-নাতনীরা আতঙ্কে দৌঁড়াচ্ছে।’ ‘’২১ শতকে যুদ্ধ অযৌক্তিক। যুদ্ধ হচ্ছে অভিশাপ এবং যখন এইসব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমাদের হৃদয় অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পক্ষে থাকে। ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল। ২১ শতকে কোনোভাবেই যুদ্ধ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’