বিনোদন ডেস্ক: ‘ইউএসএ থেকে একলা একলা ফিরছিলাম। এত চেষ্টা করলাম হ্যান্ড লাগেজ ছোট রাখতে, পারলামই না। এত বাক্সপেটরা দু’হাতে, কাঁধে, মনে হচ্ছিলো কোনো গ্রাম থেকে কাজ করার জন্য ট্রেনে করে ঢাকা আসছি। দুবাইয়ে ৯ ঘন্টা ট্রানজিট, লাউঞ্জের প্লাটিনাম কার্ড হারিয়ে ফেলে নাজেহাল।’ ‘দুবাই নেমে বোকার মতো জবুথবু হয়ে ট্রলি ঠেলছি। হঠাৎ এক জোড়া চোখ আমাকে অনুসরণ করে সামনে এসে দাঁড়ালো। ম্যাডাম, সালাম, আপনি তো আপনিই নাকি? আমি হেসে বলি হ্যাঁ আমি আমিই। এত ক্লান্ত যে আমাকে চেনা আসলেই কষ্ট। ছেলেটি দুবাই এয়ারপোর্টে কাজ করে।’ ‘আমার সব দুরাবস্থার কথা শুনে বললো, চিন্তা করবেন না, আমি ব্যবস্থা করছি। আরও কয়েকজন এসে গেল। বিস্ফোরিত নয়নে তাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা ঝরে পড়ছে। একটা জায়গায় আমাকে তারা বসালো। আমাকে বললো, এ জায়গাটা মারহাবা লাউঞ্জের মতই নির্জন। আপনি এখানে আরাম করে বসেন। সামনে নামাজের জায়গা আছে। আমরা খাবার এনে দেই। না করতে করতেই তারা অনেক খাবার, জুস, পানি এনে দিয়ে বলল, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, আমরা যথাসময়ে এসে একেবারে ফ্লাইটে উঠিয়ে দিয়ে আসবো। আমি বারবার বলছিলাম আমি পারবো, ওরা কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছে না।’ ‘একটা সময় আমি বললাম ছবি তুলবে তোমরা? হাঁফ ছেড়ে বেঁচে হেসে দাঁড়িয়ে গেল। বলল, আমরা সাহসই পাচ্ছিলাম না! আমি বললাম শোনো, তোমরা আমার দেশের সোনার ছেলে। নিজেদের অজান্তেই দেশের জন্য অকাতরে কাজ করে দেশের উন্নতি করে যাচ্ছো। আজ আমিই তোমাদের সাথে ছবি তুলবো, আসো, দাঁড়াও।’ ‘তোমাদের সাথে একাত্বতা জানাতেই, তোমাদের ভালোবাসা জানাতেই, তোমাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই আমি কনকচাঁপা নিজেকে তোমাদের কাতারে দাঁড়াতেই কণ্ঠশ্রমিক পরিচয় দেই ভালোবেসে। আমি তোমাদের ভালোবাসি বাবা। আল্লাহ তোমাদের কাজ সহজ করে দিক, প্রবাস জীবন আরামের করে দিন। আশীর্বাদ বাবারা।’ আজ এই মে দিবসে পৃথিবীর সমস্ত শ্রমিকদের জন্য রইল এই কণ্ঠশ্রমিকের হৃদয় থেকে উৎসারিত ভালোবাসা ও লাল সালাম এবং মায়ের দোয়া।’
আমি তোমাদের ভালোবাসি বাবা: কনকচাঁপা
0
Share.