বাংলাদেশ থেকে বরিশাল প্রতিনিধি: গ্রামের বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ঢাকার সাভারের নবীনগরে থাকা নিজের মুদি দোকান গুটিয়ে মালামাল বিক্রি করে দিয়েছিলেন নজরুল ইসলাম (৩৫)। সেই মালামাল বিক্রির এক লাখ ৯০ হাজার টাকা সাথে নিয়ে শনিবার (২৮ মে) রাতে তিনি ঢাকা থেকে যমুনা লাইনের বাসের যাত্রী হন। সাথে ছিলেন ছোট ভাই রাকিব আকনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৩)। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাদের দুইজনের কারোরই আর জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফেরা হয়নি। রবিবার (২৯ মে) সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের সানুহার নামক এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যমুনা লাইনের বাসের ১০ যাত্রীর মধ্যে তারা দুইজনও নিহত হন। সোমবার সকালে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মরদেহ বুঝে নিতে এসে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলেন নিহত নজরুলের ভাগ্নে নুরুল ইসলাম। নিহত নজরুল ইসলাম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর ভেচকি গ্রামের কুদ্দুস আকনের ছেলে। নুরুল ইসলাম আরো বলেন, আমার মামা নজরুল ইসলাম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ফিরে আসছিলেন। তার সাথে ছিলেন ছোট মামা রাকিব আকনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে দেখি দুইজনের মরদেহ। নুরুল ইসলাম বলেন, মামা নজরুল আকনের সাথে তার দোকান ও এর মালামাল বিক্রি করা ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন এবং মানিব্যাগ ছিল। আর আনোয়ারা বেগমের সাথে স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগ ছিল। তবে, দুইজনের মরদেহ ছাড়া আমরা আর কিছুই পাইনি। পুলিশও কিছু বলতে পারেনি। সোমবার দুপুরে গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি শেখ বেল্লাল হোসেন বলেন, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা ফায়ার সার্ভিস আমাদের কাছে শুধু একটা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ দিয়েছে। যার মধ্যে হাজার খানেক টাকা থাকতে পারে। এছাড়া যে মালামাল পাওয়া গেছে তার উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে স্বজনরা নিয়ে যেতে পারবেন। ওসি আরও বলেন, এখনও দুইজনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মরদেহ দুটি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে। বাকি মরদেহগুলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেই স্বজনরা বুঝে নিয়েছেন।