বাংলাদেশ থেকে বরিশাল প্রতিনিধি: নির্ধারিত সময়ের প্রায় পৌনে দুই ঘন্টা পর স্টেশন ত্যাগ করেছিল দুর্ঘটনার কবলে পরা যাত্রীবাহি যমুনা লাইন পরিবহনটি। পাশাপাশি বাসের চালকও ছিলেন অনভিজ্ঞ। ফলে শুরু থেকেই বেপরোয়াগতি ছিল বাসটি। এছাড়া পরিবহনটির ইঞ্জিনেও ছিলো ত্রুটি। যেকারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের সানুহার নামক এলাকায় যমুনা লাইনের যাত্রীবাহি ওই পরিবহনটি দুর্ঘটনার কবলে পরে। এতে শিশু ও নারীসহ ১০ জন নিহত এবং ১৭ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রীরা বলেন, সড়কে মনিটরিং জোরদার করা না হলে এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটতেই থাকবে। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার রাজারহাট গ্রামের বাসিন্দা আহত যাত্রী লিটন হাওলাদার বলেন, ঢাকার গাবতলী থেকে শনিবার দিবাগত রাত নয়টায় পরিবহনটি ছেড়ে নবীনগরে আসে রাত ১০টায়। সেখানে গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও তা ঠিক হচ্ছিল না। এনিয়ে যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পরেছিলেন। শেষে সব যাত্রী মিলে ঠেলে পরিবহনটির ইঞ্জিন চালু করেছি। তিনি আরও বলেন, ইঞ্জিন চালুর পর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে পুরো পথের কোনোস্থানে আর ইঞ্জিন বন্ধ করেননি চালক। এনিয়ে চালকের সাথে একাধিক যাত্রীদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। চালকের বয়স সর্বোচ্চ ২৫ বছর হতে পারে দাবি করে লিটন হাওলাদার আরও বলেন, গাড়ি চালু করার পর থেকেই চালক বেপরোয়াগতিতে চালিয়েছে। আমরা বারবার তাকে নিষেধ করেছি। কিন্তু চালক ও গাড়ির স্টাফরা তাদের কোনো কথাই শোনেননি। অপর আহত যাত্রী অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল মৃধা বলেন, পরিবহনটির রাত ১০টায় নবীনগর স্টেশন ত্যাগ করার কথা। কিন্তু সেখান থেকেই বাসটি ছাড়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে। যেহেতু বাসটি দেরি করে ছাড়া হয়েছে এজন্য চালক বেপরোয়াগতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন জলিল মৃধা আরও বলেন, গাড়ি চালানোর জন্য চালক একেবারে অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাছাড়া গাড়িটি কোথাও কেউ চেক করেনি। সড়কে যদি গাড়ি চেকের ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে এমন প্রাণহানি ঘটতেই থাকবে। আরেক আহত যাত্রী মিল্টন বলেন, বাস স্টাফরা কোন যাত্রীর কথাই শোনেননি। যেহেতু গাড়িটি দেরিতে ছাড়া হয়েছে, এ জন্য এতো বেশি গতিতে চালিয়েছে তাতে সবাই আমরা আতঙ্কিত ছিলাম। তার ওপর টেকেরহাট এসে রাত সোয়া তিনটার দিকে যাত্রী তোলার জন্য কমপক্ষে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে প্রায় ২০ জন যাত্রী তোলা হয়। মিল্টন আরও বলেন, বেপরোয়াগতিতে গাড়ি চালনা, অপ্রাপ্ত ও অদক্ষ চালকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কার্যকরী ভূমিকা না থাকলে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে এসব পরিবহনের কারণে শত শত মায়ের বুক খালি হয়ে যাবে।
বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ১০ : পরিবহনটির ত্রুটি ছিল ইঞ্জিনে
0
Share.