বিনোদন ডেস্ক: কৃষ্ণকুমার কুন্নথ, সংগীত জগতে সংক্ষেপে যিনি কেকে নামে অধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন ভারতের একজন নেপথ্য সংগীতশিল্পী। গান গেয়েছেন হিন্দি, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড়, মারাঠি, গুজরাতি ও তামিল চলচ্চিত্রে। স্পষ্ট ও শ্রুতিমধুর কণ্ঠ, কণ্ঠের বৈচিত্রতা এবং স্বরগ্রাম অনুযায়ী গায়কীর জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন কেকে। তাকে ভারতের অন্যতম বৈচিত্রপূর্ণ সংগীতশিল্পী হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট কেকের জন্ম দিল্লিতে এক হিন্দু মালয়ালি পরিবারে। বেড়ে ওঠেন নয়া দিল্লিতে। পড়াশোনা করেন দিল্লির মাউন্ট সেন্ট ম্যারিস স্কুলে। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর আট মাস একটি হোটেলের বিপণন নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন কেকে। কয়েক বছর পর, ১৯৯৪ সালে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান কেকে। বলিউডে নেপথ্য সংগীতশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর আগে তিনি প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত দলের সমর্থনে ‘জোশ অব ইন্ডিয়া’ গানে কণ্ঠ দেন কেকে। গানটির ভিডিওতে ক্রিকেট দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা যায় তাকে। কেকে সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার ও সংগীত পরিচালক রাহুল দেব বর্মণের দ্বারা প্রভাবিত। তার প্রিয় আন্তর্জাতিক সংগীতশিল্পী হলেন মাইকেল জ্যাকসন, বিলি জোয়েল, ব্রায়ান অ্যাডামস। কেকে কখনো সংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক তালিম গ্রহণ করেননি। তবে তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়েছে শ্রোতাপ্রিয় বহু গান। তিনি প্রথম সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত সংগীত পরিচালক এ আর রহমানের সংগীতে। ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়নসহ একাধিক পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন কেকে। পাশাপাশি দুটি স্ক্রিন পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি থেকেও সেরা গায়ক হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন কেকে। সব ছেড়ে মঙ্গলবার এই গায়ক চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এদিন কলকাতার নজরুল মঞ্চে লাইভ শোতে অংশ নেন তিনি। এরপর ফিরে যান হোটেলে। সেখানে গিয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত তখন ৯টা। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে গায়কের। বুধবার তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। কেকের বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তার মৃত্যুকে বলিউডসহ গোটা ভারতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বলিউড, টলিউড ও দক্ষিণের বহু তারকা এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক জানিয়েছেন। শোক জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও।