ঢাকা অফিস: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের সৃজনশীলতা ও মেধা যথাযথ পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জাতীয় সম্পদে রূপান্তর করা অপরিহার্য। প্রতিবন্ধিতার কারণে কোনো শিশুকে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রাখা যাবে না। বিশেষ বৈশিষ্ট্য-সম্পন্ন ব্যক্তিরা বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে কম্পিউটার, ইন্টারনেটেও অন্য সবার মতোই সমান পারদর্শিতার সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম।’ মন্ত্রী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সৃজনশীলতা এবং মেধা বিকশিত হওয়ার লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত কর্মসূচির পাশাপাশি বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মন্ত্রী মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় এফডিসি মিলনায়তনে এটিএন নিউজ প্রতিষ্ঠার একযুগ পূর্তি উপলেক্ষে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তানদের মা-বাবাদের নিয়ে ‘সুপার পাওয়ার প্যারেন্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। এটিএন নিউজের কর্ণধার মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিক মুন্নী সাহার উপস্থাপনায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে শুভ সূচনা হয়। পরে অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের মায়েরা তাদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই’ উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘কাজের প্রতি এসব বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের একাগ্রতা থাকে অনেক বেশি। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে অটিজম সম্পর্কে মানুষের তেমন কোনো ধারণা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অটিজমের গুরুত্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’ তার উদ্যোগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যসেবা এবং আর্থ-সামাজিক সহায়তা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বই ছাপা হয়। বহু বছর আগে আমি নিজে ব্রেইল সফটওয়্যার তৈরি করেছি। ইশারা ভাষার সফটওয়্যারেরও উন্নয়ন করা হয়েছে।’ প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ‘ডিজ্যাবিলিটি ইনফরমেশন সিস্টেম’ সফটওয়্যার চালু করে মন্ত্রী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ডিজিটাল যুগের উপযোগী জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের জন্য ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় যে কোনো সহযোগিতা প্রদানে আশ্বাস ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের নিয়ে এই ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন এবং তাদের নিয়ে নিয়মিত অনুষ্ঠানমালা প্রচারে এটিএন পরিবারের ভূমিকার প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সাত জন মায়ের কাছে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও প্রতিজনকে এক লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এটিএন নিউজ এই সম্মাননা ও চেক প্রদান করে।