ডেস্ক রিপোর্ট: মধ্যপ্রাচ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ইরানের এই ক্ষমতাধর নেতা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে একত্র হতে হবে এবং বিদেশি শক্তির প্রভাব এড়িয়ে চলতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র উত্তেজনা চলছে। এর মধ্যেই ইরানে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংকট আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেন খামেনি। যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদেশগুলোর কারণে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে যুদ্ধ, হাঙ্গামার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা প্রতিহত করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা। সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় খামেনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে…বিভিন্ন দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ এড়িয়ে চলতে হবে। অপরদিকে, ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহর। ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভুলবশত গুলি করে ভূপাতিত করার ঘটনায় ইরানে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। এই ঘটনায় ইরানের সামরিক বাহিনী দায় স্বীকার করার পর দেশটির ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু হয়। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। ইরানের এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই বিক্ষোভকে অনুপ্রেরণামূলক বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তিনি বিক্ষোভকারীদের হত্যা না করতে ইরান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ইরানের নেতাদের উদ্দেশে বলছি, আপনারা বিক্ষোভকারীদের হত্যা করবেন না। আপনারা এর মধ্যেই কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা বা বন্দী করেছেন। বিশ্ব আপনাদের দেখছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছে। গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়। জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে বুধবার ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই রাজধানী তেহরানের ইমাম খামেনি বিমানবন্দরের কাছে একটি যাত্রীবাহনী বিমান বিধ্বস্ত হয়। প্রথমদিকে বিমান ভূপাতিত করার কথা অস্বীকার করা হলেও পরে ইরানের সামরিক বাহিনী এর দায় স্বীকার করে নেয়। ওই দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৮২ জনই ইরানি নাগরিক। ৬৩ জন কানাডীয়, ১০ জন সুইডেনের, চারজন আফগানিস্তানের, তিনজন জার্মানির এবং তিনজন ব্রিটেনের নাগরিক। অপরদিকে নয় ক্রুসহ ১১ জন ইউক্রেনের নাগরিক ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষমতাসীনরা প্রথমদিকে কেন মিথ্যা বলেছে তা নিয়েই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ইরান। এরপরেই ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ইরানে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শহরে ব্যাপক আকারে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের বলতে শোনা গেছে যে, তারা (ক্ষমতাসীনরা) আমাদের বলে যে আমাদের শত্রু আমেরিকা। কিন্তু আমাদের শত্রুতো এখানেই আছে। অনেক নারীও এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে ঐক্যের ডাক আয়াতুল্লাহ খামেনির
0
Share.