প্রেম-বিয়ে-শাকিব-অপুকে নিয়ে ভিডিও বার্তায় যা বললেন বুবলী

0

বিনোদন ডেস্ক: ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে গত সপ্তাহে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করার কথা বলেছিলেন তার স্ত্রী শবনম ইয়াসমিন বুবলী। তবে সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তিনি আসেননি গণমাধ্যমের সামনে। এড়িয়ে গেছেন সাংবাদিকদের। এবার দীর্ঘ এক ভিডিও বার্তায় তার প্রেম-বিয়ে, স্বামী শাকিব খান এবং তার প্রথম স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে নিয়ে অনেক কিছুই ফাঁস করলেন বুবলী। ওই ভিডিওতে শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সবকিছুর বর্ণনা দিয়েছেন এক সময়ের এই সংবাদপাঠিকা। রবিবার রাত ৮টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন বুবলী। ভিডিওর শুরুতে নায়িকা বলেন, ‘আমি কখনো কাউকে ছোট করে কথা বলিনি, কারও বিরুদ্ধে কথা বলিনি। কাউকে অসম্মান করে, অশ্রদ্ধা করে কথা বলিনি। আমার মনে হয়েছে কিছু প্রশ্ন নিয়ে কথা বলা উচিত। আমি যদি সাংবাদিকদের ডেকে কথা বলতাম, সেক্ষেত্রে ওনাদের নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে এক ইস্যু থেকে আরেক ইস্যুতে চলে যেতাম। আমি যেটা বলতে চাইছিলাম সেটা হয়তো বলা হতো না। তাই আমার কথাগুলো বলার জন্য, শেয়ার করার জন্যই সাংবাদিকদের মুখোমুখি না হয়ে ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছি।’ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার কষ্টের জায়গা ছিল, আমি তো কিছুই জানি না। আমাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছিল, সেটা তো না। কেন আমাকে জড়িয়ে এভাবে বলা হচ্ছিল! সে কারণেই আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম।’ এ বিষয়ে শাকিবের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেছিলেন বুবলী। বলেন, ‘আমি শাকিব খানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, পরে তিনি অনেক ইমোশনালি আমাকে বলেন যে, ‘অনেক দিন ধরেই কথাগুলো তোমাকে বলতে চাচ্ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, তুমি তো এটাতে জড়িত নও। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে এক বছর ধরে আমার যোগাযোগ নেই।’ বুবলী বলেন, ‘এটা অপুদি নিজেও লাইভ প্রোগ্রামে বলেছিলেন। আপনারা অনেকেই জানেন, শাকিব খানের কথা অনুযায়ী অপু বিশ্বাসকে তিনবার অ্যাবরশন করতে হয়েছিল। চতুর্থবার বাধ্য হয়েই তিনি সন্তান নিয়েছিলেন। এইসব ঘটনায় তো আমি নেই। তখন সিনেমাতেই আমার অস্তিত্ব নেই। কেন আমাকে দোষারোপ করা হলো যে, আমার কারণে কারো সংসার ভেঙেছে? আমার কারণে কারো সংসার, সম্পর্ক ভাঙেনি। আমি স্পষ্ট করে দর্শকের উদ্দেশে বলতে চাই।’ বুবলীর বক্তব্য, ‘তাদের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াটা, সেটাও তো সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা। তারা তো ম্যাচিওর মানুষ। এটা সম্ভব যে, কারো দ্বারা প্ররোচিত! কোনো সম্পর্কে সমস্যা হওয়ার পর একজন যখন আরেকটি সম্পর্কে যুক্ত হন, সেটার জন্য কি ওই নতুন মানুষ দোষী হয়ে যায়? আমাদের সমাজে অনেকেই নতুন সম্পর্কে যুক্ত হচ্ছেন না? তাদের যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়, কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তারা যদি সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যেতে চায়, এটার জন্য কি নতুন মানুষটি দায়ী?’ বুবলী দাবি করেন, ‘শাকিব খান নিজেই আমাকে বলেছেন, তিনি এই সম্পর্কে (অপু বিশ্বাসের সঙ্গে) সুখী নন। তিনি তার জায়গা থেকে আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। যেটা আমি তার সম্মানার্থে আগেও বলিনি, আজও বলব না। এটুকু বলি, আমি তো অনেক পরে এসেছি, তাদের সমস্যাগুলো তো অনেক আগে থেকেই।’ জন্মদিনে শাকিবের দেওয়া ডায়মন্ডের নাকফুল উপহার নিয়ে বুবলী বলেন, ‘নাকফুলের বিষয়টি নিয়ে অনেকে জানতে চাচ্ছিলেন। দেখুন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে কিছু উপহার দেন, সেই বিষয়টা যদি প্রমাণ করতে হয়, তাহলে এটা নিয়ে কথা বলাই উচিত না। উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার পরও যদি কিছু প্রমাণ করতে যাই, তাহলে তাকে অসম্মান করা হবে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। উনি যেটা ভালো মনে করেছেন, বলেছেন।’ ছেলে শেহজাদ খান বীরের প্রসঙ্গেও কথা বলেন বুবলী। বলতে বলতে তার চোখ ভিজে আসে। কান্না জড়ানো কণ্ঠে নায়িকা বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম ওর বিষয়টা একসঙ্গে সুন্দরভাবে সামনে আনতে। কিন্তু কোনোভাবে হচ্ছিল না। আমি তো প্রায় তিন বছর অপেক্ষা করেছি। ওর বিষয়টা সামনে আনার পর থেকে আমি কারও বিষয়ে কোনো অভিযোগ করিনি এবং আজও করছি না।’ বুবলী বলেন, ‘আমি আমার ইমোশনের জায়গা থেকে বেবি ব্যাম্পের ছবি প্রকাশ করেছিলাম। অনেকে বলে থাকেন শাকিব খানের কাছ থেকে আমি অনেক আর্থিক সহায়তা নেই। এ কথাটা সম্পূর্ণ ভুল। এতদিনে যত কথা উঠেছে, সব বিষয়ে আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করছি, কারণ, আমি শাকিবের সাথে বিয়ের পর থেকে এবং আমার সন্তান পৃথিবীতে আসার পর তার থেকে আমি কোনো আর্থিক সাপোর্ট নেইনি। আমার সন্তানের বয়স প্রায় তিন বছরের কাছাকাছি, আমি ওর টেককেয়ার নিজেই করেছি।’ সন্তানকে নিয়ে আমেরিকায় থাকাকালীন অনেক টাকা খরচ হয়েছিল উল্লেখ করে বুবলী বলেন, ‘সন্তানকে নিয়ে আমেরিকায় থাকার সময়টাতে অনেক বড় অংকের খরচ হয়েছে। প্রায় এক বছরের মতো থাকতে হয়েছিল। তখন তিনি (শাকিব) ১৫ হাজার ডলারের মতো হেল্প করেছিলেন। বাকি প্রায় ৩০ হাজার ডলারের মতো আমি নিজে বহন করেছিলাম।’ ভিডিওর শেষাংশে ছেলে শেহজাদের উদ্দেশে কাঁদতে কাঁদতে বুবলী বলেন, ‘বাবা শেহজাদ, মা হয়তো সারাজীবন তোমার পাশে থাকবে না। কিন্তু অন্যান্য মায়ের মতো আমিও তোমার জন্য অনেক কষ্ট করেছি বা করছি। তোমাকে পৃথিবীতে আনা, বড় করা। আমি সবসময় তোমার পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। তুমি মানুষের মতো মানুষ হবা। একটি কথা মনে রেখো, তোমার মা-বাবা তোমাকে খুব ভালোবাসে। আমি হয়তো আমার জায়গা থেকে তোমার জন্য সেরাটা দিতে পারি না। কিন্তু আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি বাবা।’

প্রসঙ্গত, অপু বিশ্বাস শাকিব খানের স্ত্রী থাকাকালীনই তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান বুবলী। ২০১৮ সালের ২০ জুলাই শাকিব-বুবলীর বিয়ে হয় গোপনে। তখন অবশ্য অপুর সঙ্গে শাকিবের ডিভোর্স হয়ে গেছে। ২০২০ সালের ২১ মার্চ আমেরিকায় জন্ম হয় শাকিব-বুবলীর ছেলে শেহজাদ খান বীরের। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ সবকিছু ফাঁস করেন বুবলী।

Share.