স্পোর্টস রিপোর্ট: এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া মধ্যকার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি ছিল টানটান উত্তেজনাপূর্ণ। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পরও নির্ধারিত সময়ের খেলায় গোল পায়নি গোল দলই। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় নেইমারের গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় ব্রাজিল, পরে প্যাটকোভিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। অতপর টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে ৪-২ গোল ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চত করল ক্রোয়েশিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালপর্বের প্রথম ম্যাচে বল দখলে দুদল সমানতালে খেলতে থাকলেও আক্রমণে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে ব্রাজিল। পুরো ম্যাচের ৪৯ শতাংশ সময় নিজেদের কাছে বল রাখতে সক্ষম হন ব্রাজিলের ফুটবলাররা। আর প্রতিপক্ষের গোলবার বরাবর মোট শট নিতে পেরেছে মোট ১১টি। কিন্তু পেয়েছে মাত্র একটি গোলের দেখা। অন্যদিকে পুরো ম্যাচের ৫১ শতাংশ সময় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বল রাখেন মদ্রিচ-প্যারিসিচরা। আক্রমণে কোনো ধারই দেখাতে পারেননি ক্রোয়েটরা। ব্রাজিলের গোলবারে নিয়েছে মাত্র একটি শট। আর সেই শটেই এসেছে সমতা সূচক গোল। শুরু থেকেই ব্রাজিল আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেললেও ১৩তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। জুরানোভিচের দেয়া পাসে পা লাগানোর চেষ্টা করেন প্যালাসিচ এবং পেরিসিচ। কিন্তু কেউই বল স্পর্শ করতে না পারলে গোল পাওয়া হয়নি ক্রোয়েটদের। ম্যাচের ২০তম মিনিটে বল নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার বক্সের ভেতরে প্রবেশ করেন ভিনিসিয়াস। তার নেয়া দুর্দান্ত শটটি রুখে দেয় ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার। ফিরতি বলে কয়েকজনকে কাটিয়ে এবার শট নেন নেইমার। কিন্তু রুখে দেন ক্রোয়েশিয়ান গোলকিপার। ২২তম মিনিটে ক্যাসেমিরোর দুর্দান্ত শট, কর্নারের বিনিময়ে হয় রক্ষা। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ব্যবধানেই। দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় গতি বাড়ায় দুদলই। ম্যাচের ৫১তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের ক্রসে আসা বল লাফিয়ে হেড নিয়েছিলেন ইভান প্যারিসিচ। কিন্তু সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৫তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু সেটি ধরে ফেলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। শেষ পর্যন্ত চলতে থাকে একের পর এক আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে গোল না এলে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে লুকাস পাকুয়েতার সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করতে করতে ক্রোয়েশিয়ার ডি-বক্সের ঢুকে পড়েন নেইমার। এরপর তাকে বল পাস দেন পাকুয়েতা। ক্রোয়েট গোলকিপারকে পরাস্থ করে কোনাকুনি শটে কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নেন নেইমার। আর ১১৭তম মিনিটে বামদিক থেকে আক্রমণে গিয়ে বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন মিসলাভ ওরসিচ। বক্সের মধ্যে সেটা পেয়েই শট নেন পেটকোভিচ। বল জালে জড়ায়। তাতে ফেরে সমতা ক্রোয়েটরা।
ব্রাজিল একাদশ (ফরমেশন ৪-২-৩-১): এলিসন বেকার (গোলরক্ষক), এদের মিলিতাও, মার্কুইনহস, থিয়াগো সিলভা, দানিলো, লুকাস পাকুয়েতা, কাসেমিরো, রাফিনহা, নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রিচার্লিসন।
ক্রোয়েশিয়া একাদশ (ফরমেশন ৪-৩-৩): লিভাকোভিচ (গোলরক্ষক), জুরানকভিচ, লভরেন, জিভারডিওল, সোসা, লুকা মদ্রিচ, ব্রোজোভিচ, কোভাসিচ, পেসেলিচ, ক্রামারিচ, পেরিসিচ।