ডেস্ক রিপোর্ট: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যে কোনো সময়ে যদি দেখা যায়, গর্ভের ভ্রূণে নানা রকম ত্রুটি রয়েছে, তাহলে সেই সন্তান রাখা না রাখার সিদ্ধান্ত শুধুই মায়ের, তার কোনো আত্মীয়-স্বজন বা চিকিৎসকের কোনো দল বা মেডিকেল বোর্ড নয়। সম্প্রতি এমনই রায় দিয়েছে ভারতের বম্বে হাইকোর্ট। ওই রায়েই এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ৩৩ সপ্তাহের মাথায় গর্ভপাত করানোর অনুমতিও দিয়েছে কোর্ট। ২৯ সপ্তাহের মাথায় মেডিকেল পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল, ভ্রূণে নানা রকম জিনগত সমস্যা থাকায় সন্তানের মাথার আকার অত্যন্ত ছোট হতে চলেছে এবং তার মস্তিষ্কের আকারও স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা ছোট। বম্বে হাইকোর্ট রায় দেয়, এই ধরনের কেসে মায়ের অধিকারে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিচারকরা বলেন, ‘একজন মায়ের অস্তিত্ব, অধিকার, মতামত এবং সব জেনে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনত অধিকারকে কোর্ট নাকচ করে দিতে পারে না।’ বম্বে হাইকোর্ট আরও বলে, ‘এই ধরনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া মানে আবেদনকারীর কাছ থেকে তার মা এবং নারীত্বের সত্তাটুকুও ছিনিয়ে নেওয়া।’ গত ২২ ডিসেম্বর ওই মহিলা ২৯ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। মেডিকেল পরীক্ষায় দেখা যায়, তার গর্ভের সন্তানের একাধিক ত্রুটি রয়েছে। মাইক্রোসেফালি (স্বাভাবিকের তুলনায় মাথা ও মস্তিষ্কের আকার ছোট) ও লিসেনসেফালির (অত্যধিক মসৃণ মস্তিষ্ক) মতো জিনগত রোগের আভাস পাওয়ায় সেই মহিলা গর্ভপাত করাতে চান। কিন্তু যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ২৪ সপ্তাহের পর তিনি আবেদন করেন, মেডিকেল বোর্ড তার আবেদন খারিজ করে দেয়। তারা জানায়, শিশুর চিকিৎসা বিনামূল্যে যেকোনো সরকারি হাসপাতালে হয়ে যাবে। তবে ওই মহিলা গর্ভপাতই বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। এ জন্য তিনি বম্বে হাইকোর্টের দারস্থ হন। গত ২০ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি শেষে বম্বে হাইকোর্ট রায় দেয়, সন্তান রাখা না রাখার বিষয়ে ওই তার মা-ই সিদ্ধান্ত নেবেন। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সেই রায় জনসমক্ষে আসে।
গর্ভের সন্তান রাখা না রাখার সিদ্ধান্ত শুধু মায়ের: বম্বে হাইকোর্ট
0
Share.