অলাভজনক বলে রেল বন্ধ করতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার: শেখ হাসিনা

0

ঢাকা অফিস: লাভজনক নয় বলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার রেল বন্ধের অপচেষ্টায় ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘তারা রেলের লোকবলকেও ছাঁটাই করেছিল।’ পাবনার রূপপুর, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও কুমিল্লার শশীদল থেকে তিনটি রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে তিন রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি রেলকে নিয়ে নানা খেলা চলেছে। জাতির পিতাকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যার পর অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে মিলিটারি ডিকটেটররা ক্ষমতা দখল করেছিল। তারা আসলে এ দেশের কোনো মঙ্গল চায়নি, উন্নতিও চায়নি।’ ‘যার কারণে সাধারণ মানুষের যে পরিবহন ছিল একে একে সবই ধ্বংস করার চেষ্টা করে। এমনকি রেল লাভজনক না এই অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। রেলের লোকবল গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়। অনেক রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ বিএনপি-জামায়ত সরকার অর্থাৎ যখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিল তখন এটা করা হয়।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ বছর পরে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা সরকারে এসেই রেলকে গুরুত্ব দেই। যমুনা নদীর ওপর যে সেতু আমরা নির্মাণ করি, এটা বহুমুখী সেতু করা হয়। সেখানে আমি রেললাইন সংযুক্ত করে দিয়েছিলাম।’ ‘রেলকে পুনর্গঠন করার পদক্ষেপ আমরা নেই। আমরা দ্বিতীয়বার যখন সরকারে আসি, যেহেতু রেলের বাজেট আলাদা দেওয়া হতো না, রেল ছিল সড়কের সঙ্গে। বেশিরভাগ টাকা চলে যেত সড়কে। তখন ২০১১ সালে আমি রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করি গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন যেন সুলভ মূল্যে করা যায়।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘গত ১৪ বছরে আমরা ৬৫০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজকে ডুয়ালগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ২৯৭ কিলোমিটার লাইন পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ করেছি। ১২৬ নতুন স্টেশন ভবন ও ২২৩টি স্টেশন ভবন পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ করেছি। ৭৩২টি নতুন রেলসেতু, ৭৭৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন-পুনঃনির্মাণ এবং ৫০টি ব্রডগেজ ও ৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন করা হয়েছে।’ ‘আমরা ১০৬টি লোকোমোটিভ, ২০ সেট ডিইএমইউ, ৫৩৫টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ এবং ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করেছি। ১৩০টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছি। ইতোমধ্যে ৪৪টি নতুন এবং বর্ধিত রুটে মিতালী এক্সপ্রেসসহ মোট ১৪২টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।’ রেল বিভাগে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছি এবং পদ্মা সেতুতেও ঢাকা থেকে যশোরের রূপদিয়া ও সিঙ্গিয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’ ‘কক্সবাজারের মানুষের বহুদিনের প্রত্যাশা ছিল রেললাইন হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এটা কেউ উদ্যোগ নেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে উদ্যোগ নিয়েছে। আজকে কক্সবাজারের দুটি ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি, দ্রুত এটা শেষ হবে।’ মেট্রোরেলের পর পাতালরেল নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমআরটি-১ এর অধীনে পাতালরেলের কাজও আমরা শুরু করেছি। ইনশাআল্লাহ ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা এটা চালু করতে পারব।’ ‘পাতালরেল চালুর মাধ্যমে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি হবে। মানুষের যোগাযোগ, যাতায়াত এবং ঢাকা শহরের জানযটও ঘুচে যাবে। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

Share.