বাংলাদেশ থেকে নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতদের নাম পরশিয়া আক্তার (১৮) ও বিপুল দাস (১৯)। এদের মধ্যে বিপুল দাসের মরদেহ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের নাগড়া সাহাপাড়া এলাকা থেকে আর বুধবার সন্ধ্যায় পরশিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরশিয়া আক্তার রংছাতি গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। তিনি এবার ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কলমাকান্দা সরকারি কলেজ থেকে মানবিক শাখায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। আর বিপুল দাস পৌর শহরের নাগড়া সাহাপাড়া এলাকার শ্যামল দাসের ছেলে। তিনি আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক শাখায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। পুলিশ জানায়, পরশিয়া রংছাতি দাখিল মাদরাসা থেকে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৯ পান। এবার এসএসসিতে তিনি আশা করেছিলেন জিপিএ ৫ পাবেন। কিন্তু পেয়েছেন জিপিএ ৩.৪২। এরপর থেকে তিনি কান্নাকাটি করছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে বোঝানোর পর কিছুটা শান্ত হয়ে ঘরে যান। বাড়ির লোকজন পুকুরে গোসল করতে গেলে এ সুযোগে ঘরের থাকা কীটনাশক পান করে মারা যান। এদিকে বিপুল দাস এইচএসসিতে এক বিষয়ে ফেল করায় তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন না। বৃহস্পতিবার সকালে তার ব্যবসায়ী বাবা দোকানে যান। আর মা প্রতিবেশী একজনের বাসায় যান। সকাল পৌনে ১০টার দিকে মা ঘরে এসে বিপুলের ঝুলন্ত দেহ দেখেন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম এবং নেত্রকোনার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল না পাওয়া বা পাশ না করা মানে জীবন শেষ নয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরশিয়ার মাদরাসার সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ‘পরশিয়া মেধাবী ছাত্রী ছিল। মেয়েটি এমন কাজ করবে কেউ ভাবিনি।’ আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার বলেন, ‘বোর্ডে খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ আছে, কিন্তু কিছু না বুঝেই ছাত্রটি এমনটা ঘটিয়ে ফেললো। বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। এমন ঘটনা যেন আর কারও ক্ষেত্রে না হয়।’
নেত্রকোনা ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
0
Share.