ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছে কংগ্রেস। গতকাল সোমবার জব্বলপুরে নর্মদার কিনারে পূজা-অর্চনা সেরে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রচার শুরু করেন। এখনও চার মাস বাকি আছে নির্বাচনের। কিন্তু কর্ণাটক জয়ের পর কালক্ষেপণ না করে এ রাজ্যে প্রচারণা শুরু করেছে কংগ্রেস। সেখানে এক বিশাল জনসভায় দুর্নীতি, কর্মসংস্থানে ব্যর্থতার মতো বিষয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, এই সরকার কীভাবে চলছে, তার স্বরূপ উদ্ঘাটন করে আপনাদের চোখ খুলে দিতে এখানে এসেছি। এটুকু বোঝাতে এসেছি, বিজেপি সরকার গত তিন বছরে রাজ্যে মাত্র ২১ জনকে সরকারি চাকরি দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের মানুষ গত ১৮ বছর ধরে বিজেপির হাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতগুলো বছর যাদের বিশ্বাস করে দায়িত্ব সঁপেছে, তারা অবহেলা ও দুর্দশা ছাড়া আর কিছু উপহার দেয়নি। প্রিয়াঙ্কা এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার একের পর এক দুর্নীতির পাকে জড়িয়ে পড়েছে। কর্ণাটকে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কংগ্রেস তাঁকে ৯১ বার গালমন্দ করেছে। প্রিয়াঙ্কা সে কথা উল্লেখ করে বলেন, রাজ্য সরকারের দুর্নীতির তালিকা তার চেয়ে অনেক বড়। প্রিয়াঙ্কার সমাবেশ উপলক্ষে সোমবার গোটা জব্বলপুর শহর এবং আশপাশের এলাকা গদা দিয়ে সাজিয়েছে কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে কর্ণাটকে বিজেপির ‘আলি বনাম বজরংবলী’ প্রচার মুখ থুবড়ে পড়ার পরে কৌশলগত অবস্থান থেকেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের সঙ্গে ভোট হবে রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানায়। জনসভায় কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ১৮ বছর ধরে এই রাজ্যে বিজেপি মিথ্যার বেসাতি ও দুর্নীতি করে চলেছে। ২২০ মাস তারা রাজ্য শাসন করছে, দুর্নীতি করেছে ২২৫টি। আমরা ডাবল ইঞ্জিন, ট্রিপল ইঞ্জিন সরকারের গল্প শুনে চলেছি। কিন্তু সরকারকে কীভাবে প্রতিশ্রুতি পালন করতে হয়, তা হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার দেখিয়ে দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও দেখিয়ে দেবে। হিমাচল প্রদেশের মতোই প্রিয়াঙ্কা এদিন রাজ্যের চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর শোনান। তিনি বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে পুরোনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনবে। এ ছাড়া ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হবে। নারী সম্মান নিধির আওতায় মহিলাদের মাসে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের দাবিকে তামাশা করে বলেন, আমরা অনেক ডাবল-ট্রিপল ইঞ্জিন সরকার দেখেছি। কিন্তু হিমাচল বা কর্ণাটকের মানুষ ভোটে মুখের ওপর জবাব দিয়েছেন। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নাম না করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, মধ্যপ্রদেশের কিছু নেতা ক্ষমতার জন্য কংগ্রেসের আদর্শের পথ ছেড়ে অন্য পথে পা বাড়িয়েছেন। ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির দেড় দশকের শাসন শেষ করার রায় দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের জনতা। নির্বাচনে গরিষ্ঠতা পেয়েছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন কমলনাথ। কিন্তু ১৫ মাসের মাথাতেই জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের অনুগামী প্রায় আটজন কংগ্রেস বিধায়ক দল ছাড়ায় কমল সরকারের পতন ঘটে। আবার মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহান।