ডেস্ক রিপোর্ট: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছিন্ন হওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। এর আগে ব্রাসেলস-এর দুই কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। জনসন টুইটারে জানান, আজ আমি ব্রিটিশ জনগণের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ৩১ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের সরে যাওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। ব্রেক্সিট বিল অনুযায়ী, আগামী ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত সমস্ত সম্পর্ক একই থাকবে৷ কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ব্রিটেন ইউরোপিয়া ইউনিয়নের কোনও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না৷ এর আগে বারবার পিছিয়ে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গ্রেট ব্রিটেনের বিচ্ছেদের দিনক্ষণ। গতবছর বরিস জনসন জানান, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি কার্যকর করা হবে ব্রেক্সিট। মোট তিন দফা পিছিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ইইউ জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা কার্যকর হতে চলেছে চলতি মাসের শেষ তারিখে। ‘বাঁচি বা মরি ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করব’ এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। কিন্তু পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা বেন অ্যাক্ট আইনের কারণে ইইউ-র কাছে বিচ্ছেদের দিনক্ষণ তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাতে বাধ্য হন বরিস। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয়। বিচ্ছেদের প্রকৃত তারিখ ছিল চলতি বছরের ২৯ মার্চ। কিন্তু ব্রিটেনের পার্লামেন্ট থেরেসা মে-র নেতৃত্বাধন সরকারের সম্পাদিত বিচ্ছেদ চুক্তিতে অনুমোদন দেয়নি। আবার চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকরেরও বিরোধিতা করে বিরোধিরা। ব্রিটিশ সরকার ও পার্লামেন্টের এমন বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে আটকে যায় বিচ্ছেদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন থেরেসা। ব্রেক্সিট কার্যকরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠন করেন বরিস জনসন। এরপরও পিছিয়ে ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ। বরিস জনসন বিচ্ছেদ কার্যকরে নতুন একটি চুক্তিতে সম্মত হন। সংখ্যাগরিষ্ঠতাবিহীন প্রধানমন্ত্রী বরিস ৩১ অক্টোবরের আগে চুক্তিতে পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে সায় দেয়নি পার্লামেন্ট। এরপরেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা করেন বরিস। ১২ ডিসেম্বরের সেই নির্বাচন জিতে শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন বরিস।
ইউ-ত্যাগের চুক্তি স্বাক্ষর করলেন জনসন
0
Share.