ঢাকা অফিস: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিচার ব্যবস্থা আর আওয়ামী লীগ একাকার হয়ে গেছে। পৃথক কোনো সত্ত্বা নেই। দেশে কোনো আইন নেই। সব প্রধানমন্ত্রীর ইশারায় চলছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে অর্ধ কোটি। তাদের আসামি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। কারাগারে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে সরকারের ব্লুপ্রিন্টে। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মুক্তি সংগ্রামের নেতা’- ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের এমন বক্তব্যে বাংলাদেশের জনগণ হতভম্ব বলে এ সময় মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, প্রথিতযশা সাংবাদিক ও লেখক এম জে আকবর বাংলাদেশে এসে গতকাল এক সেমিনার শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিশিরাতের ভোট ডাকাত, ১৫ বছর বন্দুকের নলের মুখে জনগণের ঘাড়ে দৈত্যের মতো চেপে বসা গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, আকবর বলেছেন- অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দেখছি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে এবং গণতন্ত্র শক্তিশালী হচ্ছে। শেখ হাসিনা জাতিকে শুধু উন্নয়নের দিকে নয়, চারটি মাত্রাবিশিষ্ট আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে যারা নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাচ্ছে, তারা ভুলে যাচ্ছে যে বাংলাদেশ এখন ভীতু দেশ নয়। ভয় দেখালেই ভয় পাবে, এটা কাজে দেবে না। রিজভী বলেন, এম জে আকবরের মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কী করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন? জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাদের কি স্বার্থ নিশ্চিত করে? আপনাদের সমর্থনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এ দেশে নিষ্ঠুর বর্বরতা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, আপনার মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসূলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মান করা। বাংলাদেশ কোনো স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। রিজভী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা বঞ্চিত। চলমান আন্দোলনের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দেওয়া। বিএনপিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তারা নির্বাচনে এলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের এই মন্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এতক্ষণে-অরিন্দম কহিলা বিষাদের মতো কৃষিমন্ত্রীর এই হরষের স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা করে পুলিশি তাণ্ডব-হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে চলমান যত সহিংসতা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হুলিয়া, হত্যা, বিএনপিসহ বিরোধীদলের বাড়ি-ঘরে হামলা-তল্লাশি, ভাঙচুর-গৃহছাড়া-আটক বাণিজ্য সবকিছু শেখ হাসিনার পূর্বপরিকল্পিত।
বিচার ব্যবস্থা আর আওয়ামী লীগ একাকার হয়ে গেছে, পৃথক কোনো সত্ত্বা নেই: রিজভী
0
Share.