ঢাকা অফিস: দুই সাক্ষীকে হুমকির অভিযোগে বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামি ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ মামলার দুই সাক্ষীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগে মিন্নির জামিন বাতিল আবেদনের শুনানি শেষে রবিবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। একই দিন এ মামলার তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এ নিয়ে রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তে প্রকাশ পাওয়া ৭৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের মনোনীত আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, পাঁচ সহযোগীসহ রিফাত হত্যা মামলার দুই সাক্ষীর বাড়িতে গিয়ে তাদের হুমকি দেন মিন্নি। তাই সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এ নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে আজ আদালতে মিন্নির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ৪ জানুয়ারি পাঁচ সহযোগী নিয়ে মিন্নি রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষী জাকারিয়া বাবু ও হারুন মৃধার বাড়িতে গিয়ে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ বিরত রাখার জন্য হুমকি দেন। এ অভিযোগে গত আট জানুয়ারি বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের জন্য ওইদিন মিন্নিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ১৫ জানুয়ারি আদালতে এর উত্তর দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। পরে ১৫ জানুয়ারি মিন্নির আইনজীবী কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তর আদালতে দাখিল করেন। এরপর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের মৌখিক আবেদনের জন্য ২৬ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবের শুনানির দিন ধার্য করেন। এরপর ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ শুনানির জন্য সময় আবেদন করলে আদালত দুই ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন। এরপর আজ শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটে। গত ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক। পাশাপাশি রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয়জন আসামি জামিনে রয়েছেন। বাকিরা কারাগারে। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
রিফাত হত্যা : মিন্নির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ
0
Share.