শনিবার, নভেম্বর ২৩

ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ স্লোগান দিয়ে নিজের শরীরে আগুন দিলেন মার্কিন সেনা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন এক মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য। মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে এই ঘটনা ঘটে।  সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শরীরে আগুন দেওয়ার সময় একটি ভিডিও তিনি ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার করেছেন। সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আর গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকব না। ’ এরপর ‘ফিলিস্তিন মুক্ত’ করো স্লোগান দিয়ে শরীরে তরল পদার্থ ঢেলে নিজ শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেন। সিক্রেট সার্ভিস এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্ত করছে ওয়াশিংটন পুলিশ বিভাগও। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, লোকটি দূতাবাসের কর্মীদের পরিচিত ছিল না। এছাড়া একটি সন্দেহভাজন গাড়ির বিষয়ে উদ্বেগ থাকায় বোমা নিষ্ক্রিয় ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল বলেও জানিয়েছে বিবিসি। পরে কোনো বিপজ্জনক উপকরণ না পাওয়ায় এটিকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়। দূতাবাসের একজন মুখপাত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় দূতাবাসের কোনো কর্মী আহত হয়নি। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি কূটনৈতিক মিশনের সামনে কারও আত্মহনন বা এই ধরনের চেষ্টার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ইসরায়েলি কনস্যুলেটের সামনে এক বিক্ষোভকারী নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ সেসময় জানায়, ওই বিক্ষোভকারী পেট্রোল ব্যবহার করেছিল এবং সেই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে একটি ফিলিস্তিনি পতাকা পাওয়া যায়। জানা গেছে, নিজের গায়ে আগুন দেওয়া ওই ব্যক্তি মার্কিন বিমান বাহিনীর সদস্য। এয়ার ফোর্সের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, এই ঘটনায় তাদের একজন ​​এয়ারম্যান জড়িত। রয়টার্স বলছে, গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অব্যাহত প্রতিবাদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে ইসরায়েলের দূতাবাস। গাজা যুদ্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েক দফায় ফিলিস্তিনপন্থি এবং ইসরায়েলপন্থি বিক্ষোভও হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

Share.