ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ধারে কাছেও নেই বিজেপি

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ধস হয়েছে বিজেপির। এর আগের নির্বাচনে ২০১৯ সালে এই রাজ্যে ভারতের কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি পেয়েছিল ১৮ আসন। এবার তা নেমে এসেছে ১২টিতে। অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস তাদের আসন ১৮টি থেকে বাড়িয়ে নিয়েছে ২৯টিতে। কংগ্রেস গতবার দুটি আসন পেলেও এবার পেয়েছে একটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস শুধু বেশি আসনই পায়নি। তারা ভোটও বাড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, গত নির্বাচনের তুলনায় সাড়ে ৩ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল। ২০১৯ সালের নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। এবার পেয়েছে ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ। অপরদিকে বিজেপির ভোট কমেছে ২ শতাংশের সামান্য বেশি। জয়ের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। এ জন্য তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। এই ফলে আমি খুশি কারণ বিজেপি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি দিয়ে আমাদের ও অন্যান্য দলের ওপরে নানাভাবে অত্যাচার করছিল। তাদের অহংকার অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। ’ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক তারকা প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে প্রথমেই বলতে হয় দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তিনি গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৭ লাখেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। এদিকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান এবং বর্ধমান দুর্গাপুরে আরেক ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ জয়লাভ করেছেন। সাবেক ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও জিতেছেন হাওড়া থেকে। এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীকে এবারও লোকসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল। এদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেতা মেদিনীপুরের ঘাটালে দেব (দীপক অধিকারী), বীরভূমে শতাব্দী রায়, যাদবপুরে সায়নী ঘোষ এবং জুন মালিয়া ও রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময় হিন্দি চলচ্চিত্রের মহাতারকা শত্রুঘ্ন সিনহা জিতেছেন আসানসোল আসন থেকে। মেদিনীপুরের তমলুক আসন থেকে অল্প ব্যবধানে জিতেছেন বিজেপির তারকা প্রার্থী ও কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সামান্য ভোটে জিতেছেন বালুরঘাট থেকে। তবে হেরে গিয়েছেন রাজ্যের সাবেক সভাপতি এবং দলের তারকা প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। কোচবিহারে নিশিত প্রামাণিক এবং বাঁকুড়ায় সুভাষ সরকার পরাজিত হয়েছেন। বসিরহাট আসনেও জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আসনে জয়ী হয়েছেন হাজী নুরুল ইসলাম। এর মধ্যেই রয়েছে সন্দেশখালি। যেখানে গত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক সহিংসতা চলেছে। শেষ পর্যন্ত সহিংসতার প্রভাব এই আসনে বা অন্য কোথাও পড়েনি। তৃণমূলের পুরোনো রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে জিতেছেন সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মালা রায়, আবু তাহের খান ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যারাকপুরে বারবার দল পরিবর্তন করা বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংকে হারিয়েছেন নবাগত পার্থ ভৌমিক। বিধানসভায় বিরোধী বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী সামান্য ভোটে জিতেছেন মেদিনীপুরের কাঁথিতে। বিজেপির দুই আদিবাসী নেতা আলিপুরদুয়ারে মনোজ টিজ্ঞা এবং মালদা উত্তরে খগেন মুর্মু জয়ী হয়েছেন।

Share.