ঢাকা অফিস: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সব ধরনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি পাওয়া ইচ্ছার বিষয়ে কিছু জানি না। কারণ এ বিষয়ে আমরা কিছু বলি নাই। আর পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে আবেদন করা হয়েছে কিনা, সেটাও জানা নেই। তবে আমরা তাকে মুক্ত করতে এবং বাঁচাতে চাই, সুস্থ করে জনগণের মধ্যে নিয়ে আসতে চাই।’ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এবং ঢাকা বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে ‘খালেদা জিয়ার পরিবার বলছে তিনি প্যারোলে মুক্তি নিতে রাজি’, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। এসময় মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করছে। আইনমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছেন- বিশেষ আইনে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা আছে। সেই বিষয়ে কোনও চেষ্টা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের সবগুলো বিষয়ে চেষ্টা করেছি, করে যাবো। পরিষ্কার করে একটা বিষয় বলছি, তাকে আইনিভাবে নয়, বেআইনিভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আটক করে রাখা হয়েছে। সুতরাং সিদ্ধান্তটা রাজনৈতিক হতে হবে। অর্থাৎ দখলদার সরকারকে নিতে হবে, তাকে আটক করে রাখবেন, নাকি একটা সুষ্ঠু পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবেন।’ খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপ করবেন কিনা জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সবসময় জানাচ্ছি। আপনাদের মাধ্যমে জানাচ্ছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করেছি। সংসদেও আলোচনা হয়েছে। এখন পুরো বিষয়ে সরকারের কাছে বল দেওয়া আছে। এর জন্য দায়ী সরকার। তারা বেআইনিভাবে তাকে আটক করেছে। এই ধরনের মামলাতে একজন সাধারণ নাগরিকও ৭ দিনের মধ্যে জামিন পান।’ যৌথসভায় কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হবে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব। তবে বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতির দরকার হয় না। নিয়ম ও আইন আছে- অবগত করার, আমরা তাদেরকে অবগত করবো বিক্ষোভ মিছিলেন আগে সমাবেশ হবে কিনা জানতে চাইলে মহাসচিব বলেন, সমাবেশ বলতে যা বোঝায় সেটা করবো না। তবে বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখা হবে। এসময় আওয়ামী লীগ ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি তাদের নতুন চরিত্র নয়। ৭২ সালেও আমরা তাদের এই চরিত্র দেখেছি। ওই সময় যেসব রাজনৈতিক দল ও লোকেরা ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন তাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। সেই সময় নতুন একটি দল রক্ষীবাহিনী করে বিরোধীমতের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আজকেও তারা একই কায়দায় সংবিধানকে কেটে-ছিঁড়ে ভিন্নপন্থায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে।’ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল প্রমুখ।
আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং বাঁচাতে চাই: ফখরুল
0
Share.