শুক্রবার, মার্চ ১৪

সংস্কার প্যাকেজ ছোট হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে, বড় হলে আগামী বছর জুনে অনুষ্ঠিত হবে:প্রধান উপদেষ্টা

0

ঢাকা অফিস:রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার (১৪ মার্চ) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে এ কথা বলেন।বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে শুরু হওয়া সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে দেওয়া মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন।গুতেরেস বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবো।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বাস্তব পরিবর্তন আসবে।বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গুতেরেসকে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য ৬টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ১০টি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে। তিনি বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে একবার একমত হলে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে; যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচনসংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি।’ তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে।‘মানবিক সহায়তা কমানো একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে, কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমার জন্য একটি বিশেষ বিষয়।’অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার সফর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী।’অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান, যাতে রোহিঙ্গারা সম্মানের সঙ্গে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। তিনি বলেন, যত দিন তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে, তত দিন পর্যন্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা যেন নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে, তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা হতাশার অনুভূতি রয়েছে।’জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন।

Share.