ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস মোকাবিলাও একটা যুদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস মোকাবেলাকে ‘একটি যুদ্ধ’ উল্লেখ করে যতদুর সম্ভব ঘরে থাকা এবং অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গুজব রটনাকারী এবং এ পরিস্থিতি সুযোগ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, কেউ গুজব ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর কেউ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার মানুষকে এই প্রাণঘাতি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা। দেশবাসীকে উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার সচেতনতা আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং সর্বোপরি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখবে। বাঙালি বীরের জাতি। নানা দুর্যোগ-সঙ্কটে বাঙালি জাতি সম্মিলিতভাবে সেগুলো মোকাবিলা করেছে। ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা শত্রুর মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলাও একটা যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আপনাদের (জনগণ) দায়িত্ব ঘরে থাকা। আমরা সকলের প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধে জয়ী হবো, ইনশাল্লাহ। আজ সমগ্র বিশ্ব এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে। তবে যেকোন কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের সরকার প্রস্তুত রয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী অতিরিক্ত ভোগপণ্য মজুদ না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা জনগণের সরকার। সব সময়ই আমরা জনগণের পাশে আছি। আমি নিজে সর্বক্ষণ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। আমাদের এখন কৃচ্ছতা সাধনের সময়। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোন ভোগপণ্য কিনবেন না। মজুদ করবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ দিন। আর দুর্যোগের সময়ই মনুষত্যের পরীক্ষা হয়। এখনই সময় পরস্পরকে সহায়তা করার; মানবতা প্রদর্শণের। তাই দেশবাসীকে আবারও বলছি; স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সকলে যাঁর যাঁর ঘরে থাকুন, ভাল থাকুন, সুস্থ্য ও নিরাপদে থাকুন। দেশে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ বছর রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারি গুদামগুলোতে ১৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি মিল মালিকদের কাছে এবং কৃষকদের ঘরে প্রচুর পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ আছে। চলতি মওসুমেও আলু-পিঁয়াজ-মরিচ-গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই খাদ্য মজুদ করবেন না। আর কৃষক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, কোন জমি ফেলে রাখবেন না। আরও বেশি বেশি ফসল ফলান। প্রায় ২২ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নানা উদ্যোগ, এই ভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষায় দেশবাসীকে ঘরে থাকা অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি গত ১০ বছরে দেশের উন্নয়ন-সাফল্যেগুলো দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন। একইসঙ্গে মহামারি আকারে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া এই করোনাভাইরাস সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা এবং দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ সরাসরি প্রচার করা হয়।

Share.