ঢাকা অফিস: নওগাঁর পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র চিকিৎসক সংকট। ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র চার জন। এছাড়া এক্সরে, আল্ট্রাসনো ও ইসিজি যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীরা রোগ নির্ণয়ের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না উপজেলার দেড় লাখ মানুষ। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক নিয়োগ হলে এ সংকট কেটে যাবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০১১ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল ও যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়নি। বাড়ানো হয়নি সুযোগ-সুবিধা। এজন্য গত ৮ বছর ধরে ৩১ শয্যার জনবল ও যন্ত্রপাতি দিয়েই চলছে ৫০ শয্যার কার্যক্রম। তবে ৩১ শয্যার হাসপাতালে যে জনবল ও যন্ত্রপাতি থাকার কথা সেটিও নেই। ৫০ শয্যা হওয়ায় হাসপাতালে ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা। রয়েছেন মাত্র চার জন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রায় প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় তিন জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০-৩০০ রোগী আসেন। গাইনি,মেডিসিন, অর্থোপেডিক্স, সার্জারি, শিশুসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদসহ ২১টি পদের মধ্যে ১৭টি পদই শূন্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি এক্সরে মেশিন সরবরাহ করা হলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় তা চালু করা হয়নি। পরে টেকনিশিয়ান এলেও অব্যবহৃত মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। একমাত্র আল্ট্রাসনো মেশিনটি গত ছয় মাস ধরে নষ্ট। আর চার মাস ধরে ইসিজি মেশিনও নষ্ট। হাসপাতালে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকার কথা থাকলেও সচল আছে একটি। বাকি দুটি অ্যাম্বুলেন্স ১৫ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। যেটি সচল আছে সেটিও প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমন অবস্থা দেখে কিছু কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা রোগীদের ভুলভাল বুঝিয়ে ক্লিনিকগুলোতে নিয়ে যান। এতে করে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছে। এছাড়া আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ লোকজন। তেঁতুলিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, (বাংলাদেশ সময়)‘সকালে ১০টায় লাইনে দাঁড়িয়ে ১২টার সময় ডাক্তার দেখাতে পারছি। এতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে খুব কষ্ট হইছে।’ ঘাটনগর গ্রামের মরিয়ম বানু বলেন, ‘২ ঘণ্টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি ডাক্তার দেখাবো বলে। এখনও দেখাতে পারি নাই। এই বয়েসে বেশি সময় দাঁড়াতে পারি না।’ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০-৩০০ রোগী সেবা নিচ্ছেন। তিনিসহ ৩ জন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পালাক্রমে ইনডোর-আউটডোরে তারা চিকিৎসা দিচ্ছেন। আশা করছেন বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক বলেন, ‘পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক নিয়োগ হলে এ সংকট কেটে যাবে।’
মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা,২১ ডাক্তারের স্থলে আছেন চার জন!
0
Share.