ডেস্ক রিপোর্ট: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর সেনাবাহিনীর গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে লড়তে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেদারল্যান্ডের পথে রওনা হয়েছেন। রবিবার মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিতোর বিমানবন্দরের মধ্য দিয়ে কর্মকর্তা পরিবেষ্টিত সু চি হাসিমুখে হেঁটে যাচ্ছেন, এমন ছবি প্রকাশিত হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। এর আগের দিন শনিবার শহরটিতে তার কয়েক হাজার সমর্থক সমাবেশ করে তার প্রতি সমর্থন জানায়। ইয়াঙ্গুনে তার জন্য প্রার্থনা করে দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডের হেগের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে অভিযোগের প্রথম শুনানি হবে; সু চি এতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। রবিবার বিকালে সু চির কয়েক ডজন সমর্থকেরও হেগের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী কয়েকদিন শহরটিতে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছেন তারা। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গাম্বিয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য নবেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর মধ্যে গণহত্যাই সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ। তিনি দিনের শুনানি চলাকালে গাম্বিয়া আইসিজেতে জাতিসংঘের বিচারকদের ১৬ সদস্যের প্যানেলের কাছে পুরো শুনানি শুরু হওয়ার আগে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ‘অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ’ জারি করার আবেদন জানাবে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ কথিত হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। গত দুই বছরে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে অভিহিত করে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের হয়ে সু চির লড়ার ঘোষণা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার বন্ধু বলে পরিচিত প্রভাবশালী অনেককে বিস্মিত করেছে। তার এমন পদক্ষেপ বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিন্দাও কুড়িয়েছে। কিন্তু তারপরও দেশে সু চি বীরের মর্যাদাই পাচ্ছেন। তার পক্ষে রাজপথে, অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণা চলছে। ‘সুচির পাশে দাঁড়াও’ লেখা বিলবোর্ড, ব্যানারও রাস্তায় রাস্তায় শোভা পাচ্ছে। নেদারল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগের সন্ধ্যাটি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি-য়ের সঙ্গে বৈঠক করে কাটানা সু চি। বৈঠকে উভয় দেশ শক্তিশালী মিত্রতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিভাগের ডেপুটি পরিচালক ঝাও লিজিয়ান জানিয়েছেন।
গণহত্যার শুনানিতে অংশ নিতে দেশ ছাড়লেন সু চি
0
Share.