অক্সিজেন সঙ্কটে ৪ দিনে ভারতে এক হাসপাতালে ৭৪ করোনা রোগীর মৃত্যু

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের গোয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চারদিনে অক্সিজেন সঙ্কটে মারা গেছেন কমপক্ষে ৭৪ করোনা রোগী। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এই মৃত্যু। টানা চারদিন একের পর এক মারা যাচ্ছেন রোগী। এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, ওই হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট অব্যাহতভাবে চলছে। সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সারদেসাইয়ের মতে, গত রাত একটা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ‘ক্রিটিক্যাল ডার্ক আওয়ারসে’ মারা গেছেন ১৩ জন রোগী। বৃহস্পতিবার একই হাসপাতালে মারা গেছেন ১৫ জন। বুধবার মারা গেছেন ২০ জন। মঙ্গলবার রাত দুটা থেকে ৬টা পর্যন্ত মারা গেছেন ২৬ জন।গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেছেন, অক্সিজেনের পর্যাপ্ততা এবং তা সরবরাহের মধ্যকার ফারাকের কারণে অনেকে মারা যেয়ে থাকতে পারেন। ১৪ই মে বিজয় সারদেসাই টুইটে বলেছেন, ‘লজিস্টিক’ ইস্যুতে গত রাতে মারা গেছেন ১৩ জন। আরেকটি তদন্ত কমিটি করার দরকার নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। করোনা মহামারি নিয়ে এরই মধ্যে হাইকোর্টে আবেদনের শুনানি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তার রাজ্যে অক্সিজেন সরবরাহে কোনো সঙ্কট নেই। এখানে উল্লেখ্য, গোয়ার মুখ্য সচিব পিকে গোয়েল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মঙ্গলবার একটি চিঠি লিখেছেন। তার সেই চিঠির সঙ্গে প্রমোদ সাওয়ান্তের বক্তব্য বিপরীতমুখী। ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের মতে, মুখ্যসচিব তার চিঠিতে লিখেছেন ১লা মে থেকে ১০ই মের মধ্যে বরাদ্দকৃত ১১০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের মধ্যে মাত্র ৬৬.৭৪ টন অক্সিজেন সরবরাহ পেয়েছে কোলহাপুর থেকে। উল্লেখ্য, গোয়ায় এই সঙ্কটের সময়ে যে পরিমাণ অক্সিজেন হাসপাতালে প্রয়োজন তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ যায় কোলহাপুর থেকে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার লিখেছে- কমপক্ষে এক সপ্তাহ ১১ মেট্রিক টনের স্থলে এই রাজ্যকে ২২ মেট্রিক টন অক্সিজেন দেয়ার কাতর অনুরোধ করছি। তাহলে ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে।ওদিকে গোয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রোগীতে পূর্ণ। নতুন কোন রোগী ভর্তির স্থান ফাঁকা নেই। সর্বশেষ যে কয়েকজন ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাদের স্থান হয়েছে মেঝেতে। একজন রোগীর পরিবারের এক সদস্য এনডিটিভিকে বলেছেন, মাত্র একটি হুইলচেয়ার পাওয়ার জন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আট ঘন্টা। পরের দিন আমাদের রোগীর অক্সিজেন লেভেল কমে দাঁড়ায় ৫০-৬০। এ অবস্থায় আমাদের একটি ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু কোনভাবে তার ব্যবস্থা হচ্ছে না। এটার কথা বাদ দেন, এখানে তো বেডই নেই। তারা আমাদের রোগীকে মেঝেতে শুইয়ে রেখেছে। ওদিকে রাজ্যে করোনা মোকাবিলা নিয়ে বেশ কয়েকটি আবেদনের শুনানি চলছে বোম্বে হাইকোর্টের গোয়া শাখায়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার বলে দেয়া হয়েছে, লজিস্টিক কারণে কোনো করোনা রোগীকে মরতে দেয়া যাবে না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ গোয়াতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা পজেটিভের হার ছিল। শতকরা হিসাবে এই হার ৪৮.১ ভাগ।

Share.