অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ : জি৭’র প্রতি চীনের ক্ষোভ

0

ডেস্ক রিপোর্ট:  শিনজিয়াংসহ চীনের বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করার কারণে জি৭’র দেশগুলোর নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন, শিনজিয়াং, তিব্বত, হংকংসহ যেসব ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে- তা সবই চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চলতি সপ্তাহে গণমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, ‘জি৭ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চীনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। তারা স্পষ্টতই চীনের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করেছে এবং নিজেদের ব্লকের মধ্যে রাজনীতিতে জড়িয়ে ফেলেছে। সর্বোপরি এটি চীনের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের রীতিনীতি অগ্রাহ্য করা এবং শান্তি, উন্নয়ন ও সহযোগিতার লঙ্ঘন।চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর জোট হিসেবে জি৭কে দ্বন্দ্ব ও বিভাজন তৈরি না করে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পরিবর্তে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে সহায়তা করতে হবে। জি৭-কে সাম্যের জোট হিসেবে দাবি করা হয়, কিন্তু সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে- বিশ্বের ৫৩টি দেশ ও অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখে থাকে।’চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব সমস্যা সমাধানে কঠোর পরিশ্রমের আহ্বান জানাচ্ছি। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজস্ব পদ্ধতির সংশোধন করুন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ধারণাটি প্রসারিত করার ভুলচর্চা বন্ধ করুন। চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, চীনের সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতিমালাগুলো অসম্মানিত করে চীনের ভাবমূর্তি নষ্টের সমস্ত প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে।’জি৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাম্প্রতিক এক বৈঠকে হংকং ও শিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক স্থাপনা নির্মাণের মতো ইস্যুগুলোকে কেন্দ্র করে চীনের ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।এই বৈঠক শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা চীনকে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষা করার আহ্বান জানাচ্ছি। শিনজিয়াং ও তিব্বতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষ করে উইঘুরসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। সেখানে স্থাপিত ক্যাম্পগুলো, জোরপূর্বক শ্রম আদায় এবং বন্ধ্যাত্ব গ্রহণে বাধ্য করার মতো কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা উদ্‌বেগে রয়েছি।’বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য সেখানে স্বাধীন ও নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার দেয়ার দৃঢ় সমর্থন করছি আমরা। সেখানে জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের প্রবেশের বিষয়েও আমাদের আহ্বান অব্যাহত থাকবে।’হংকং ইস্যু প্রসঙ্গে জি৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, ‘১২ মার্চ আমাদের বিবৃতিটি পুনরায় স্মরণ করছি এবং হংকংয়ের নির্বাচনি ব্যবস্থার সব গণতান্ত্রিক উপাদান বিনষ্ট করা নিয়ে আমরা এখনও গভীর উদ্বিগ্ন। আমরা চীনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেওয়া তাদের প্রতিশ্রুতি ও আইনি শর্তগুলো মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

Share.