আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই: শেখ হাসিনা

0

বাংলাদেশ থেকে কক্সবাজার প্রতিনিধি: একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখার অভিজ্ঞতা থাকায় যুদ্ধ কি ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে তা স্মরণ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা অবলোকন করতে পারেন, অনুভব করতে পারেন। আমরা যুদ্ধ চাই না। কোনো সমস্যা থাকলে তা আলোচনা করে সমাধান সম্ভব। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ উদ্বোধন শেষে বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। ইনানীর নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকতে চার দিনের এই আয়োজন বুধবার সকালে উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। বাংলাদেশসহ ২৮ দেশের নৌসেনারা এই আন্তর্জাতিক আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধই মানবজাতির জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা নিজেরা দেখেছি। বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা অবলোকন করতে পারেন, অনুভব করতে পারেন।’ ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আন্তর্জাতিক মহলেও সকলকে এই আহ্বান জানিয়েছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে।’ জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকে অগ্রাধিকার দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই নীতি মেনেই আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি।’ ‘বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এই নীতিমালা মেনে চলি। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে।’ ‘সংঘাত নয়, সমঝোতা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব’ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়। আমাদের লক্ষ্য শান্তি বজায় রাখা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।’ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই সমাধান করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানার সমস্যাও সমাধান করেছি।’ ‘আমাদের সমুদ্রসীমা আইন ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব করে গিয়েছিলেন। জাতিসংঘ করেছে তার অনেক পরে। আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা প্রথম এই ক্লজে সই করি। আর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।’ ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি দেশ আরেকটি দেশের সঙ্গে এতটা শান্তিপূর্ণভাবে ভূমি বিনিময় করতে পারে, তার একটি বিরল দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।’ শান্তি সমৃদ্ধি এনে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমসাময়িক সময়ে ভারতীয় মহাসাগরের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববাণিজ্যের ৯০ শতাংশই এই সমুদ্র পথে চলে। অবাধ বৈশ্বিক বাণিজ্যের স্বার্থেই সমুদ্রকে নিরাপদ রাখতে হবে। চলাচল নিরাপদ রাখতে হবে।’

Share.