আমার কাছে জীবনের চাহিদা খুব কম -জাকিয়া বারী মম

0

বিনোদন ডেস্ক: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। বর্তমানে বাসায় অবস্থান করছেন তিনি। করোনা ভাইরাসে সব শিল্পীর মতো বন্ধ আছে তারও শুটিং। করোনায় ঘরবন্দি দিনগুলো কেমন কাটছে মমর? তিনি বলেন, আমার খুব ব্যস্ততায় সময় কাটছে। বসে আছি, বিরক্ত, কী করব, হতাশ এমন শব্দগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না। কারণ আমি ব্যস্ত। বাসার যাবতীয় কাজ, রান্নাবান্না, নামাজ, টিভি দেখে সময় কেটে যায়। সত্যি বলতে কি, ভালো থাকাটা নিজের ওপর নির্ভর করে। সমস্যা থাকবেই। এরমধ্যেই আমাদের ভালো থাকতে হবে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে যুক্ত হচ্ছি। আমি কৃতজ্ঞ মানুষ আমার কথা শুনতে ভালোবাসে বলেই এসব অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকছে। এটা আমি চাইও, শিল্পী হিসেবে এটা আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা। এ সময়ে ঘরে থেকে মানুষকে ঘরে থাকার এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার কথা বলতে পারছি। আমি আমার কাজটা করছি। করোনার এই সময়ে আপনার উপলব্ধি কী? মম বলেন, আমরা অনেক কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করি। কোথায় যেন দৌড়াতে চাই। কিসে যেন আমাদের অনেক তাড়া। এখন তো সবাই ঘরে আছি। সবার তো দিন ঠিকই কেটে যাচ্ছে। হয়তো মন ভালো নেই, হয়তো নিয়মিত জীবনে নেই। তবুও কী আমরা খুব খারাপ আছি? যারা ক্ষুধায় কষ্ট করছেন, যাদের বাসস্থান নেই, যারা চিকিৎসার অভাবে ভুগছেন, যারা মারা যাচ্ছেন ওই মানুষগুলো ছাড়া আমরা প্রায় সবাই নিজের ঘরে পরিবারের সঙ্গে আছি। নিজের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার চেষ্টা করছি। সত্যি বলতে, মানুষের চাহিদার শেষ না থাকাটাই বড় অশান্তির কারণ। করোনার দিন শেষে কোন ধরনের পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন? এ প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, আমার কাছে জীবনের চাহিদা কম। শুধু পেশা নয়, নেশার কারণে অভিনয় করি। মানুষ যদি নিজেদের ভালোভাবে পরিচালিত করতে চায়, পারবে না। এটা চেইন অব কমান্ড। আমি চাইলেই হবে না। আমি আমারটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। সবটুকু না। আমাদের অধিকাংশ যদি একটা লেভেল পর্যন্ত  মানবিক থাকি, সততা বজায় রাখি, পেশাদারী মনোভাব পোষণ করি তাহলে সব সম্ভব। গত কয়েক বছর ধরে আমরা পারিবারিক সঙ্কট লক্ষ্য করেছি। এখন তো সবাইকে পরিবারে এসে আশ্রয় নিতে হলো। পরিবারকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকলে তো একটি বেসিক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সঙ্গে সহাবস্থান করার যে মানসিকতা তা থাকতে হবে। তাহলে সব কিছু আবার সুন্দর হবে আমাদের জন্য। শুটিংয়ের দিনগুলো কতটা  মিস করেন? ‘ছুয়ে দিলে মন’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, মানুষ অভ্যাসের দাস। এই জীবনটা আমার এখন ভালো লাগছে। যে মানুষগুলো ক্ষুধার যন্ত্রণায় বের হচ্ছে তাদের জন্য খারাপ লাগে। বড় পরিসরে কিছু করতে পারছি না। আমি একটা সময় ভাবতাম এমন নিরবচ্ছিন্ন অবসর থাকবে, কোথাও কোনো কোলাহল থাকবে না,শুধু পাখির ডাক থাকবে। এখন আমি যে পরিবেশ পাচ্ছি এটা আমার স্বপ্ন। আমি নীরবতা অনেক পছন্দ করি। নীরবতা আমাকে অনেক আনন্দিত করে, ভাবতে সাহায্য করে। সকালবেলা উঠে নামাজ পড়ে যখন দেখি আমার কবুতরগুলো ডাকাডাকি করে তখন আর ঘুম আসে না। আর শুটিং মিসের কথা বললে বলব, প্রোডাকশনের ছেলেদের মিস করছি। ওরা না চাইতেই আমার জন্য চা এনে দিত, এখন নিজে বানিয়ে পান করতে হয়। দর্শকের কাছে কী বার্তা দিতে চান? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা আমাকে ভালোবাসেন তাদের কাছে দাবি নিয়ে বলতে চাই, ঘরে থাকা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। সরকারি যে নির্দেশগুলো দেওয়া হচ্ছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী চলতে হবে। এ সময়ে নানা খবরে উদ্বেগের সৃষ্টি হচ্ছে। গুজব থেকে দুরে থাকতে হবে।

Share.