আ.লীগকে ৩২১ বছর এতিম হয়ে রাস্তায় ঘুরতে হবে: মোশাররফ

0

ঢাকা অফিস: বাকশালের জন্য আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতায় আসতে পারেনি। এবার ক্ষমতা থেকে গেলে তাদেরকে ৩২১ বছর রাস্তায় রাজনৈতিক এতিম হয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।  ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের অবৈধ সাজা ও মিথ্যা মামলা বাতিলের’ দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য। মোশাররফ বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগকে স্মরণ করে দিতে চাই, গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু বেশিদিন টিকে নাই। বাকশালের খেসারত দিতে গিয়ে ২১ বছর তাদেরকে এতিম হিসেবে রাস্তায় ঘুরতে হয়েছে। আমি তাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এখন অলিখিত বাকশাল পরিচালিত করছেন। এবার যখন আপনাদের বিদায় হবে, শুধু ২১ বছর কেন, ৩২১ বছর রাস্তায় রাজনৈতিক এতিম হয়ে ঘুরতে হবে।’ কারাগারে খালেদা জিয়া অসুস্থ উল্লেখ করে মোশররফ বলেন, ‘জামিন পাওয়া তার অধিকার। তাকে জামিন দেওয়া হোক। কারাগারে তার কিছু হলে সরকারকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। আজকে আপনাদের সেই সর্তক করতে চাই। অনতিবিলম্বে তাকে মুক্তি দেন। তার নেতৃত্বে দেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে সরকার। তবে এই সরকারের অধীনে তা সম্ভব নয়।  তাই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। একইসঙ্গে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দিতে হবে।’ কোনও স্তরে আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে দাবি করে মোশাররফ বলেন, ‘কীভাবে নিয়ন্ত্রণ থাকবে, যাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায়, তাদেরকে দিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করিয়েছেন। তাহলে তারা কেন আপনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’ আওয়ামী লীগের নিজ দলের ওপর নিয়ন্ত্রণ নাই বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর ওপরও নিয়ন্ত্রণে নেই।  সরক‍রি কর্মকর্তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই।  আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার যাদের মাধ্যমে টিকে আছে, আজকে সেই  ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অকর্ম প্রকাশ করছে। আমরা বলতে চাই- যাদেরকে গ্রেতার করা হয়েছে, তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।  ছাত্রলীগের যে শীর্ষ নেতাদের ৬৮ কোটি টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তাদের বহিষ্কার করে সরকার দায় মুক্তি পেতে চায়। অথচ তাদের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা।’ ভারতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী করা চারটি চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী বলে উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘এসব চুক্তিতে ভারতকে দেওয়ার বিষয় আছে, কিন্তু নেওয়ার ব্যাপারে সেখানে কোনও উল্লেখ নেই। দুইদেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে সেখানে দেওয়া-নেওয়ার বিষয় থাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেত্রী শুধু দিয়ে আসলেন। তিস্তা চুক্তি বহুদিন ঝুলে আছে। সেটার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারলেন না।’ সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যার কথা তুললেই আওয়ামী বলে- তাকে নিয়ে রাজনীতি করছে।  আমি আজকে তার কথা তুলতে চাই না। কিন্তু আবরার হত্যার কারণে যে ২০ জন  আসামি তারা কারা। তারাও মেধাবী ছাত্র ছিল। আমাদের প্রশ্ন, এই ২০ জন সোনার ছেলেকে দানবে পরিণত করেছে কারা, ছাত্রলীগ তাদেরকে দানবে পরিণত করেছে। তাদের অবিভাবক হচ্ছে আজকের প্রধানমন্ত্রী।  একদিন সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। যারা ২০ জন সোনার ছেলেকে দানবে পরিণত করেছে  তাদের বিচার আমরা চাই।’ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা প্রতিযোগিতা করে অকর্ম করছে বলেও দাবি করে মোশাররফ বলেন, ‘কিছু চুনো-পুটি ধরা পড়েছে। তাদের পেছনে রাঘব বোয়াল আছে। তাদেরও গ্রেফতার করতে হবে।’ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন,  প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

Share.