ঋণ প্রদানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি আইসিবি: বাংলাদেশ ব্যাংক

0

ঢাকা অফিস: বাংলাদেশ ব্যাংকই বলছে, ঋণ প্রদানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ- আইসিবি। এক তদন্ত প্রতিবেদনে এই অপকর্মে জড়িত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়ার কথাও বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও মুখে কুলুপ এটেছেন আইসিবির বর্তমান কর্তারা।  ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ- আইসিবি। সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন এই প্রতিষ্ঠানের ৫০৪তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালে। অভিযোগ উঠেছে সেখানেই একাধিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় মোটা অংকের ঋণের অনুমোদন। সম্প্রতি সময় সংবাদের হাতে আসা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, এসব ঋণ অনুমোদনে নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে আইসিবি। দেখা যায়, কেরাণীগঞ্জের ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেড নামে ১০০ মেগাওয়াট একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রকল্প ঋণ হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে সাড়ে ৬৫৬ কোটি টাকা। একদিকে অপর্যাপ্ত জামানত, আবার নেই কোন অবকাঠামো; এরপরও সেখানে ছাড় করা হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা। ওই একই সভায় বেঙ্গল গ্যাস লিমিটেডকে পর্যাপ্ত জামানত ছাড়া দেয়া হয় প্রায় ৯২ কোটি টাকা। আইসিইবি প্রতিবেদনে মিল নেই বাস্তবের সঙ্গে। কোন ধরনের উৎপাদন না থাকলেও নীটজোন মোড লিমিটেডকে দেয়া হয়েছে ৪ কোটি টাকা। ৬ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হলেও পাওয়া যায়নি রাঙ্গুনিয়া অটো ব্রিকস লিমিটেডের পরিদর্শন প্রতিবেদনও। এমনকি কোম্পানিটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতেও পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল। একই অবস্থা ৬ কোটি টাকা ঋণ নেয়া বাস্তুশৈলি হোল্ডিং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটিরও। অথচ এসব যাচাই বাছাই এর প্রাথমিক দায়িত্বে থাকা আইসিবির ক্রেডিট শাখার মুখে কুলূপ। কোন মন্তব্য করতে চাননি বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকও। এসব ঘটনার তদন্ত করছে বিএসইসিও। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি’র চেয়ারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম জানান, পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর নেয়া হবে ব্যবস্থা।  বিশ্লেষকরা বলছেন, কোন প্রকার ছাড় না দিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ে অনিয়মের তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা উচিত।    এ প্রসঙ্গে কোম্পানি আইন ও অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ এম মাসুম বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করতে না পারলে এ ধরণের অপতৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব না। যারা দক্ষ ও অভিজ্ঞ তাদেরই এই বোর্ডে বসানো উচিত। আর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকেও আরও তৎপর হতে হবে।   গত জুলাইয়ে আইসিবির বিভিন্ন অনিয়ম, পর্যালোচনা করে তৈরি করা তদন্ত প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Share.