ডেস্ক রিপোর্ট: করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বিশ্ব। এই সংকট শেষ পর্যন্ত আঘাত হানবে মানুষের পেটে। জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, করোনার কারণে খাদ্য নিরাপত্তার যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তাতে বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে। খবর রয়টার্সের। মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ইতোমধ্যে বিশ্বে খাদ্য সংকটে ভোগা মানুষের সংখ্যা সাড়ে ১৩ কোটি। করোনার সংকটের কারণে এর সঙ্গে আর ১৩ কোটি মানুষ যুক্ত হতে পারে। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে সাড়ে ২৬ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগবে। পর্যটন রাজস্ব হারানো, প্রবাসীদের আয় পাঠানো কমে যাওয়া এবং ভ্রমণসহ অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার কারণে আয় কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে। ডব্লিউএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে সংস্থাটির নিজস্ব খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশে অন্তত ১০ কোটি মানুষকে খাদ্যের জোগান দেয় ডব্লিউএফপি। এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ পরিচালক আরিফ হুসেইন বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য করোনাভাইরাস সম্ভবত বিপর্যয়কর হতে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দৈনিক মজুরি পেলেই কেবল খেতে পান এমন লাখ লাখ মানুষের জন্য এই মহামারি মারাত্মক বিপর্যয়কর। লকডাউন আর বিশ্বজুড়ে আসন্ন মন্দায় ইতোমধ্যে তাদের সামান্য সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে এই বিপর্যয় সামাল দিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ ডব্লিউএফপি বলছে, বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষের বেশিরভাগই নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর বাসিন্দা। খাদ্য সংকট বিষয়ক বৈশ্বিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সবচেয়ে বেশি মানুষ সংঘাত কবলিত দেশের বাসিন্দা। তাদের সংখ্যা প্রায় সাত কোটি ৭০ লাখ। এর পরেই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সংকটে পড়া মানুষ। তাদের পরিমাণ তিন কোটি ৪০ লাখ। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে পড়া আরও দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে। বিশ্বজুড়ে নতুন করে যেসব মানুষ খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে তাদের সহায়তার জন্য চলতি বছর ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের তহবিল প্রয়োজন। গত বছরের রেকর্ড ৮ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে যা বেশি। তবে করোনার কারণে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়া দেশগুলো অর্থায়ন করবে কিনা তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছে সংস্থাটি।
করোনায় দ্বিগুণ হতে পারে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা: জাতিসংঘ
0
Share.