করোনা ভাইরাসের কারণে মিয়ানমারে স্কুল বন্ধ

0

ডেস্ক রিপোর্ট: একদিনে সর্বোচ্চ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ডের পর দেশের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমার। বুধবার দেশটিতে নতুন করে ৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, সেখানে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঘটনা বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। স্থানীয়ভাবে নিশ্চিত সংক্রমণের কোনো ঘটনা ছাড়াই কয়েক সপ্তাহ পার করেছিল মিয়ানমার, কিন্তু সম্প্রতি আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা। নয়টি পৃথক এলাকায় তাদের খোঁজ পাওয়া গেছে। এদের সবার সঙ্গেই রাজ্যের রাজধানী সিত্তউয়িতে ছড়িয়ে পড়া প্রাদুর্ভাবের সম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মুখে গত সপ্তাহে সিত্তউয়িতে লকডাউনের পাশাপাশি কারফিউও জারি করা হয়েছিল।এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় মিয়ানমারে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে কম। এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা মাত্র ৫৭৪ জন আর মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ রোগী বৃদ্ধির কারণে কিছুটা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। “আগামীকাল থেকে সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি আমরা,” বুধবার রয়টার্সকে বলেছেন দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব বেসিক এডুকেশনের মহাপরিচালক কো লেই উয়িন। “দেশে স্থানীয় সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কোভিডের (সংক্রান্ত) কেন্দ্রীয় কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” বলেছেন তিনি। বুধবার রাখাইনের বাইরে একমাত্র রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে। ওই ব্যক্তি ভ্রমণে যাওয়ার জন্য চিকিৎসা ছাড়পত্র পেতে পরীক্ষা করার পর তার দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়। মিয়ানমারে স্থানীয় সংক্রমণের কোনো ঘটনা ছাড়াই এক মাস পার হওয়ার পর ১৬ অগাস্ট থেকে ফের নতুন রোগী শনাক্ত হতে শুরু করে, যার অধিকাংশই ঘটে সিত্তউয়িতে। সিত্তউয়ির একটি শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে আটকে রাখা হয়েছে। ২০১২ সালে রাখাইনে রক্তক্ষয়ী জাতিগত সহিংসতার পর থেকে তাদের এ শিবিরে রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে, পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা পেতেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। নিরাপত্তার অজুহাতে রাখাইনের অনেক অঞ্চলেই ইন্টারনেটে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে মিয়ানমার। স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কর্মীরা এসব বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে উচ্চগতির ইন্টারনেট চালু করার আহ্বান জানিয়েছে। গত সপ্তাহের প্রথমদিকে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত যে ১৭৯ জন রোগী পাওয়া গেছে তারা মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আরও সংক্রামক হয়ে ওঠা করোনাভাইরাসে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ সীমাবদ্ধ রাখতে মিয়ানমার মার্চের শেষ দিক থেকে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু বিদেশে থাকা নাগরিকরা দেশটিতে ফিরতে পারছেন, কিন্তু দেশে ফেরার পর তাদের বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে।

Share.