করোনা ভাইরাসের বিবর্তন, গোলকধাঁধায় বিজ্ঞানীরা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাস এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন এই  ভাইরাসের শত শত পরিবর্তন বা রূপান্তর ঘটেছে, যা থেকে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস রোগ সৃষ্টি করছে। নিত্য রূপ পরিবর্তনের ফলে বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন নি যে, কোনো ভ্যাকসিন বা টীকা কতটা কার্যকর হবে। তারা শুধু বলছেন, ভাইরাসটি তার রূপ পরিবর্তন করছে। অনলাইন বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে- এখন প্রশ্ন হলো, এর মধ্যে কোন পরিবর্তিত রূপটি সংক্রমণ ছড়াতে এবং তীব্রতায় পরিবর্তন আনে?  যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাথমিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশেষ একটি বিবর্তন ডি৬১৪জি প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। করোনা ভাইরাসের বিবর্তিত এই রূপটি অধিক হারে সংক্রমিত করতে পারে। তবে এই বিজ্ঞানীদের দেয়া তত্ত্ব এখনও অন্য বিজ্ঞানীরা পর্যালোচনা করেন নি অথবা তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয় নি। গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএআইডি) ব্যবহার করে নিউ মেক্সিকোর লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা ভাইরাসটির গায়ের কাঁটার মতো দেখতে ‘স্পাইক’গুলোর পরিবর্তন শনাক্ত করছেন। এই কাঁটার মতো স্পাইকগুলোই এই ভাইরাসের ব্যতিক্রমী চেহারা দিয়েছে। এসব বিজ্ঞানী বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে এই স্পাইকগুলোর পরিবর্তনের ফলে ভাইরাসটির বৃদ্ধি অধিক দ্রুততর হয়। তবে এর পরিণতি কি সে সম্পর্কে এখনও পরিষ্কার জানা যায় নি। বৃটেনের শেফিল্ডে করোনা রোগীদের ওপর প্রণীত ডাটা বিশ্লেষণ করেছেন একদল বিজ্ঞানী। যদিও তারা দেখতে পেয়েছেন যে কিছু মানুষ আছেন, যাদের মধ্যে এই ভাইরাসটির বিবর্তন ঘটেছিল। ওইসব ব্যক্তির দেহ থেকে ভাইরাসটির বিপুল পরিমাণ নমুনা হিসেবে নেয়া হয়েছিল। তবে বিজ্ঞানীরা এমন কোনো প্রমাণ পান নি যে, ওইসব আক্রান্ত মানুষ অধিক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অথবা বেশি সময় হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।  ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে আরেকটি গবেষণায় এই ভাইরাসের ১৯৮টি পরিবর্তন শনাক্ত করা হয়েছে। এই গবেষণার অন্যতম লেখক প্রফেসর ফ্রাঁসোয়া ব্যালোক্স বলেছেন, নিজে নিজে বিবর্তিত হওয়া খারাপ কিছু নয়। ধারণাতীত গতিতে সার্স-কোভ-২ দ্রুতগতিতে বা ধীর গতিতে বিবর্তিত হচ্ছে কিনা তা বলার মতো কিছু নেই। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি না যে, এই ভাইরাসটি অধিক পরিমাণে অথবা কম পরিমাণে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে কিনা এবং অধিক সংক্রামক কিনা তা বলতে পারছি না।  আরেকটি গবেষণা করা হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগোতে। সেখানেও ভাইরাসটি রূপ পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলো ভাইরাসটি বিভিন্ন রকম ‘স্ট্রেইন’-এর মতো নয়। তারা চূড়ান্ত করে বলেছেন, মাত্র একটি রকম ভাইরাস বর্তমানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন বা টীকা আবিষ্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ভাইরাসটির গাঠনিক কাঠামোর ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোতে নজর রাখা। এক্ষেত্রে ফ্লু ভাইরাসের কথাই ধরা যাক। এই ভাইরাস এত দ্রুত পরিবর্তন হয় যে, প্রতি বছরই এর টীকা সে অনুযায়ী আধুনিক মানের করতে হয়।

Share.