গুরুতর করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সাহায্য করছে সস্তা একটি স্টেরিয়ড ওষুধ: গবেষণা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ব্রিটেনের গবেষকরা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, একটি সস্তা এবং সহজলভ্য স্টেরিয়ড ওষুধ গুরুতর করোনা রোগীদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেসব করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ভেন্টিলেটর বা অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে তাদের চিকিৎসা ‘বড় ধরনের সাফল্য’ দেখিয়েছে ডেক্সামেথাসোন। সাধারণত বাত ও অন্যান্য রোগের রোগীদের প্রদাহ হ্রাস করতে এই ওষুধ ব্যবহার হয়ে থাকে। ৬৪০০-র বেশি রোগীর ওপর এই গবেষণা চালায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা বলছেন, এসব রোগীর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশকে ডেক্সামেথাসোন দেয়া হয়েছিল এবং দুই-তৃতীয়াংশ রোগীকে এই ওষুধ দেয়া হয়নি। গবেষকরা বলছেন, যাদের ওষুধ দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে বিশেষ করে গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রে কার্যকারিতা দেখিয়েছে এই ওষুধ। তবে কম অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে এটা কাজ করেনি। তারা বলছেন, যেসব রোগীর ভেন্টিলেটরে চিকিৎসা চলছে, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৩৫ শতাংশ কমিয়েছে এই ওষুধ। আর অক্সিজেন প্রয়োজন এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এটা ২০ শতাংশ। গবেষক পিটার হর্বি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটা দারুণ একটি ফলাফল। জীবন বাঁচানোর বিষয়টি স্পষ্ট এবং যাদের অক্সিজেনে চিকিৎসা চলছে তাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা কম নয়। তাই এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসোন মানদণ্ড হতে পারে। ডেক্সামেথাসোন সস্তা, যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ আছে এবং বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করা যাবে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, গুরুতর করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে এই ওষুধ প্রয়োগ করা শুরু করবে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত হেলথ সার্ভিস। এজন্য সরকার দুই লাখ ওষুধ মজুদও করেছে বলে জানান তিনি। এই গবেষণার সহ-গবেষক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রে বলেছেন, গবেষণায় দেখা গেছে কোনও করোনা রোগী যদি  ভেন্টিলেটর বা অক্সিজেনে থাকে তাদের ডেক্সামেথাসোন দেয়া হলে, জীবন বাঁচতে পারে এবং এটা খুব সস্তায় করা সম্ভব। এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সহসাই ডেক্সামেথাসোনের জায়গা নিতে পারবে না অন্য কোনও ওষুধ। কারণ মাত্র ৫০ পাউন্ডের কম খরচ করেই আটজন রোগীর চিকিৎসা এবং একজনের জীবন বাঁচানো সম্ভব এই ওষুধ দিয়ে। গবেষকরা বলছেন, যদি মার্চ থেকেই এই ওষুধের প্রয়োগ শুরু হতো তাহলে ব্রিটেনে অন্তত ৫ হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো যেতো। করোনার চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে যে গবেষণা চালানো হয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে ডেক্সামেথাসোন দিয়েও পরীক্ষা করা হয়। তবে গবেষণায় দেখা যায় যে, করোনার চিকিৎসায় কাজ করছে না হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। করোনা প্রতিরোধের চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারে পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যে এই ওষুধ ব্যবহার করেছেন বলেও জানান তিনি। করোনাভাইরাসের একটি টিকা তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের গবেষকরা পাগলের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি প্রতিষেধক আবিষ্কার হতে আগামী বছর বা আরও বেশি সময় লাগতে পারে।

Share.