চিকিৎসাসেবায় নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে টেলিমেডিসিন : ওবায়দুল কাদের

0

ঢাকা অফিস: করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে টেলিমেডিসিন সেবা নতুন ধারার সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশে টেলিমেডিসিন সেবায় কার্যত বিপ্লব ঘটে গেছে।’ আজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন’ নামের একটি অ্যাপ উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন’ অ্যাপের মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেবে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন যে কেউ। করোনায় টেলিমেডিসেন সেবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চিকিৎসকরাও নিজেদের এবং রোগীর কথা বিবেচনা করে এই মহামারি থেকে বাঁচতে চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় সময়ের প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবায় নতুন ধারার সৃষ্টি হয়েছে; সেটা হলো টেলিমেডিসিন সেবা।’ শহর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সারা দেশে এমনকি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া এটিই টেলিমেডিসিন নামে পরিচিত। করোনায় মূলত এই পথ দেখিয়েছে। দেশে টেলিমেডিসিন সেবায় কার্যত বিপ্লব ঘটে গেছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে। দক্ষিণ এশিয়ায় যখন সাবমেরিন ক্যাবল আসে তখন বাংলাদেশকে বিনে পয়সায় এর সংঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। ১৯৯১ সালে একবার, ১৯৯৪ সালে আরেকবার এ প্রস্তাব এসেছিল। তৎকালীন সরকারের অজ্ঞতার কারণেই দেশ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত হয়।’সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষণা করে যে, ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করবে। একটি উন্নত দেশ, সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, একটি ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উৎপাদনব্যবস্থা, নতুন অর্থনীতি সব মিলিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বপ্নই দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্ন ২০২১ সালের আগেই বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।’ ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা ও ঘোষণা-পরবর্তী নানামুখী কল্যাণকামী কর্মকাণ্ডের ফলে তরুণরা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভলপমেন্ট, ফ্রিল্যান্সিং, বিপিও, বেশকিছু তথ্যপ্রযুক্তির প্রায় সব খাতেই নিজেদের সংযুক্তি বৃদ্ধি করেছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন’ অ্যাপ বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে একটি নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করবে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে রোগী ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করবেন। এই অ্যাপে রোগীদের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ফলে এই তথ্য পরবর্তী সময়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম, মফস্বল শহর বা পল্লী অঞ্চলের একজন দরিদ্র অসহায় রোগী যাদের ঢাকা শহরে এসে পয়সা খরচ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর সামর্থ্য নেই অথবা কোনো জটিল রোগী যাকে অনেক দূর থেকে চিকিৎসকের কাছে আনতে দেরি হয়ে যাবে- এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসার স্বার্থে ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন’ অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইলে ঘরে বসেই দূর-দূরান্তের রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি এই অ্যাপটি বাস্তবায়ন করেছে। অ্যাপ উদ্বোধনের সময়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. হোসেন মনসুর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, আইইবি নেতা প্রকৌশলী রনক আহসান, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য ড. মো. মাহফুজুল ইসলাম, প্রকৌশলী আবু হাসান মাসুদসহ উপকমিটির সদস্যরা।

Share.