চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হলেও বাজারে প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্যমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়বে না। চীন থেকে কম পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চীনের করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না তা সরকারের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের বিরূপ প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগের বিষয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। এর আগে বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দিন করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে কি ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, এনবিআর প্রতিনিধি, এফবিসিসিআই প্রতিনিধিসহ অন্য স্টেক হোল্ডারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবের বিষয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে স্টেক হোল্ডারের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ প্রতিবেদন দেবে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তিনি বলেন, চীন ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানির বিষয়ে কৌশল নির্ধারণে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে, পেঁয়াজ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে চীন থেকে খুব কম পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এ মুহূর্তে দেশের বাইরে থেকে যে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে তার মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চীন থেকে আসছে। আর মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে ৫০ শতাংশ। সুতরাং চীন বন্ধ করলেও পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না। টিপু মুনশি বলেন, চীনের পেঁয়াজ আমাদের দেশের মানুষ পছন্দ করে না। চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি যদি বন্ধও হয়ে যায় তাহলেও পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে বিদেশ থেকে প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ঢুকছে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ আমদানি হচ্ছে মিয়ানমার থেকে। পাকিস্তান থেকে আসছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। এছাড়া তুরস্ক থেকেও আসছে, আর চীন থেকে খুব কম পরিমাণ আসছে। তিনি বলেন, পেঁয়াজ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। পেঁয়াজ আমদানির ওপর নির্ভরশীল না থেকে চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, পেঁয়াজের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা গেলে কৃষক পেঁয়াজ উৎপাদনে উৎসাহী হবেন। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে পেঁয়াজ রফতানি করা সম্ভব হবে। পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি এর উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা ও পেঁয়াজ সংরক্ষণের বিষয়ে সরকার চিন্তা ভাবনা করছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর দেশের চাহিদা মেটাতে ৮ থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ প্রতিবেশী ভারত থেকে আমদানি করা হতো। এবছর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার কারণে সমস্যা হয়েছে। পরে মিয়ানমার, মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান, চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়েছে।

Share.