ছাত্রাবাসে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : দুই আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে

0

ঢাকা অফিস:  সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্করের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। কড়া পাহারার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ দুই আসামিকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে তোলা হয়। সেখানে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য্য দুই আসামির সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক এম সাইফুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই আসামি সাইফুর ও অর্জুনকে শাহপরাণ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া এজাহারভুক্ত দুই আসামিসহ চারজনকে এখনো সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁদের আগামীকাল মঙ্গলবার আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে গতকাল রোববার সাইফুর রহমানকে সুনামগঞ্জ ও অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে গতকাল ভোরে সাইফুর রহমানকে এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া গতকাল রোববার দিবাগত রাতে এ মামলায় রাজন নামের আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তিনি এ মামলার অজ্ঞাতপরিচয় তিন আসামির একজন। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কচুয়া নয়াটিলা এলাকা থেকে গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।এ সময় রাজনকে আশ্রয় দেওয়া ও সহযোগিতা করায় আইনুল নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। র‍্যাব-৯-এর মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ওবাইন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।এর আগে গতকাল রাতে এ মামলার আরো দুই আসামি শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি ও রবিউল ইসলামকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্বগুনিপাড়ার বাড়ি থেকে গতকাল রাত ৯টার দিকে রনিকে গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব-৯-এর সদস্যরা।এ ছাড়া হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহমুদ উল্লাহ জানান, জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গতকাল রাত ১০টার দিকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।এ নিয়ে এই মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে চারজন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। জানা গেছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শনিবার ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)। তাঁদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আর মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেটের সদর উপজেলায়। অভিযোগ উঠেছে, মামলার এই ছয় আসামি ছাত্রলীগের কর্মী। এ বিষয়ে ওসি আবদুল কাইয়ুম জানান, মামলায় ছয়জনকে সরাসরি জড়িত বলে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে তাঁদের ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি এম সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি রামদা, একটি ছোরা ও জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়।

Share.