জন্মবার্ষিকীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা

0

ঢাকা অফিস: জন্মদিনে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। মহীয়সী এই নারীর ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে রবিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ রুবেল নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে বেশি জমায়েত না করে তারা জনদশেক নেতাকর্মী শহীদ জননীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এদিকে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহীদ জননীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার বেলা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত স্কাইপের মাধ্যমে ‘অনলাইন সম্মেলন’ করা হবে বলে নির্মূল কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ‘করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় নির্মূল কমিটির চলমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচি’ নিয়ে সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা, দেশে ও বিদেশে সব শাখার নেতাকর্মীরা যুক্ত হবেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধ্য অনুযায়ী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ সংগ্রামে নিয়োজিত রয়েছে। লেখিকা জাহানারা ইমাম (ডাক নাম জুডু)১৯২৯ সালের ৩ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আব্দুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম। প্রথম জীবনে শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও স্বাধীনতার পরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেন তিনি। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা গণআদালতের প্রধান উদ্যোক্তা জাহানারা ইমাম মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান। জাহানারা ইমামের আত্মজীবনীমূলক লেখা ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বইটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি অসাধারণ দলিল হিসেবে দেখেন ইতিহাসবেত্তারা। সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে ‘বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কার’ ও ‘কমর মুষতারী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। ১৯৯১ সালে ২৯ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলাম গোলাম আজমকে আমির ঘোষণা করলে তার প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয়। জাহানারা ইমাম ছিলেন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘শহীদ জননী’ হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন মুক্তিযুদ্ধে ছেলে গেরিলা যোদ্ধা রুমিকে হারানো এই মা। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে শফি ইমাম রুমী শহীদ হন এবং স্বামী শরীফ ইমামও ওই সময়ে মারা যান।

Share.