ঢাকা অফিস: চীন ও বাংলাদেশ একে অপরের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। বলেন, ‘বাংলাদেশ জ্বালানি সংকট সমাধানে চীনের সহায়তা চেয়েছে। বেইজিং এই মুহুর্তে জ্বালানি রপ্তানি করার মতো সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। তবে বাংলাদেশ তেমন জরুরি পরিস্থিতিতে পড়লে চীন অবশ্যই পাশে দাঁড়াবে।’ কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠনের আয়োজন ডিক্যাব টকে বুধবার কথা বলছিলেন চীনের রাষ্ট্রদূত। জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ অনুষ্ঠানে ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈন উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। চীন আর বাংলাদেশ একে অন্যের ভালো প্রতিবেশি মন্তব্য করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নিজেদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাসংক্রান্ত মৌলিক স্বার্থের বিষয়ে দুই দেশ সব সময় একে অপরকে বুঝেছে এবং সমর্থন করেছে।’ বাংলাদেশে চীনের কোনো ঋণ ফাঁদ নেই বলে আবারো উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ চীনের। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শ্রীলংকার চেয়ে অনেক ভালো।’ শ্রীলংকার এই পরিণতির পেছনে দেশটিতে পশ্চিমাদের বাণিজ্যিক ঋণের দায় দেখছেন লি জিমিং। বলেন, ‘শ্রীলংকার মোট ঋণের মাত্র ১০ শতাংশ চীনের।’ বাংলাদেশ জ্বালানি সংকট সমাধানে চীনের সহায়তা চেয়েছে জানিয়ে দেশটির দূত বলেন, ‘বেইজিং এই মুহুর্তে জ্বালানি রপ্তানি করার মতো সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। তবে বাংলাদেশ তেমন জরুরি পরিস্থিতিতে পড়লে চীন অবশ্যই পাশে দাঁড়াবে।’ চীনের সহায়তায় বাংলাদেশে নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির দাবি করে লি জিমিং বলেন, ‘এর ফলে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে।’ চীন বাংলাদেশে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চায় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ লক্ষে চীন কাজ করে যাচ্ছে।’ বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণ অব্যাহতভাবে ‘এক চীন মতাদর্শ’ মেনে চলবে বলেও আশা পনুর্ব্যক্ত করে চীনের রাষ্ট্রদূত। বলেন, ‘চীনের আইনসম্মত ও ন্যায্য অবস্থান বাংলাদেশ সব সময় বুঝবে ও সমর্থন করবে।’ ‘তাইওয়ান ইস্যুতে এক চীন নীতির প্রতি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারে আমরা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞ। আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় দুই দেশই একসঙ্গে কাজ করবে।’ বাংলাদেশে ঠাঁই নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান চীনের রাষ্ট্রদূত। বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন গভীরভাবে চেষ্টা করছে। বেইজিং এই ইস্যুতে নীরবে কাজ করে চলেছে। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে। তবে সেজন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।’ জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন কোনো নির্যাতন করছে না দাবি করে আন্তর্জিাতিক সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবরকে ‘পশ্চিমা মিডিয়ার প্রচারণা’ বলেও দাবি করেন চীনের রাষ্ট্রদূত। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে বাংলাদেশে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানোনোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
জরুরি জ্বালানি পরিস্থিতিতে পড়লে বাংলাদেশের পাশে অবশ্যই দাঁড়াবে চীন : রাষ্ট্রদূত
0
Share.