ডেস্ক রিপোর্ট: মহামারি করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বাড়ছিল বেকারত্বের হার। তবে আগস্টে এই হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। নতুন করে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়েছে ১৪ লাখ মার্কিনির। গতি ফিরেছে শিল্পখাতের কার্যক্রমে। তবে দেশটিতে এখনো ফেব্রুয়ারির চেয়ে বেকার সংখ্যা বেশি। এরই মধ্যে কর্মস্থলে ফিরেছেন ১ কোটি মার্কিনি। এদিকে, চলতি বছরের ৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারিয়েছেন ২০ লাখ মার্কিনি। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাম্পের সময়কালের বেকারত্বের হার অন্য প্রেসিডেন্টের সময়ের তুলনায় বেশি। মার্কিনিদের উচ্চ বেকারত্ব হারের বোঝা মাথায় নিয়েই নির্বাচনে দাঁড়াবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের সময় যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব হার ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এরপর ধীরগতিতে বাড়তে থাকে বেকারত্বের হার। করোনা মহামারির লকডাউনে যা ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর আবার কমতে কমতে আগস্টে প্রথমবারের মতো ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে বেকারত্ব হার। লকডাউন শিথিল হওয়ায় শিল্পখাতে নতুন ১৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে।কিন্তু এখনও স্থিতিশীলতা আসেনি মার্কিন শ্রমবাজারে। কর্মসংস্থান বাড়ছে ধীরগতিতে। প্রণোদনাও যথেষ্ট হচ্ছে না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য। দেশটির শ্রম অধিদপ্তর বলছে, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব হার সর্বোচ্চ বেড়েছে। এর আগে ১৯৮০ সালে জিমি কার্টারের শাসনামলে ৯৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছিল। তবে চাকরি হারিয়েছিলেন ৮ লাখ মার্কিনি। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময়কাল ২০০৪ সালে বেকার হয়েছিলেন ৬ লাখ ৫ হাজার মার্কিনি। সেসময় নতুন করে কর্মসংস্থান হয়েছিল ১৫ লাখ মার্কিনির। তবে আশার কথা হলো, গেলো ৪ মাসে যারা চাকরি হারিয়েছেন, এর মধ্যে ১ কোটি মার্কিনি আবার চাকরি ফিরে পেয়েছেন। ট্রাম্প বলছেন, মহামারি শেষ হলেই কর্মসংস্থান আবার চাঙ্গা হবে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। শতাংশের হিসেবে যা মাত্র ৫ শতাংশ। গেল ২০ প্রেসিডেনশিয়াল সময়ের মধ্যে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৪ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ড. রুজভেল্টের তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে ২১ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছিল। এসময় গ্রেট ডিপ্রেশন শেষ হলেও শুরু হচ্ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
এদিকে, করোনা মহামারিতে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন খাতে ২০ লাখ কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। আগস্টেই ছাঁটাই হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার কর্মী। চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাই হয়েছে ১৯ লাখ ৬৩ হাজার। এরমধ্যে বিনোদন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাঁটাই হয়েছেন ৪০ শতাংশ কর্মী। চাকরির বিষয়ে নানা পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল আউটপ্লেসমেন্ট ফার্মের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে আগস্টে বিভিন্ন খাত থেকে ৫৬ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। যা জুলাইয়ের চেয়ে কম হলেও গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে ২০০১ সালে সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ লাখ ৫৬ হাজার কর্মী ছাঁটাই হয়েছিলেন। করোনা মহামারিতে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩২ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
ট্রাম্পের মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি
0
Share.