তালগাছেই আটকে আছে সরকারের বজ্রপাত প্রতিরোধব্যবস্থা

0

ঢাকা অফিস:  পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বজ্রপাত প্রতিরোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বাংলাদেশে। আধুনিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থার বিষয়টি এখনো পরিকল্পনাতে সীমাবদ্ধ। কার্যকর আছে তালগাছ রোপণ পদ্ধতি। অথচ তালগাছ রোপণকে অকার্যকর উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবাহিনীর রাডার ব্যবহার করে সফটওয়ারের মাধ্যমে দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব।পৃথিবীর বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশে বসবাস করছি আমরা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় আমাদের দেশে।সরকারি তথ্যমতে, গত এক দশকে বজ্রপাতে মারা গেছে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ। গত দেড় মাসে ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি বেসরকারি একটি সংস্থা।এ অবস্থায় বজ্রপাত প্রতিরোধে কী করছি আমরা? পুরনো পদ্ধতি তালগাছ রোপণের পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা জানান দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। প্রাক-সতর্কীকরণ ব্যবস্থার বিষয়টি এখনো পরিকল্পনাতেই সীমাবদ্ধ। আর লাইটেনিং এরেস্টার বা বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হলেও সেটি ব্যয়বহুল হওয়ায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সরকার।দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম ৪০ সেকেন্ড আগে ওয়ার্নিং দিতে পারে। এটি বসানোর জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।  দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়া চলছে। এক কোটি তালগাছ রোপণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩৮ লাখ তালগাছ লাগানো হয়েছে। লাইটেনিং এরেস্টার বা বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এবং এক একটি বসাতে খরচ পড়বে সাড়ে ৮ লাখ টাকা।এদিকে, তালগাছ রোপণ ও এরেস্টার স্থাপনকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অকার্যকর পদ্ধতি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, এরেস্টার স্থাপন করে কখনোই দেশের মানুষকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ট্রান্সফর্মা রক্ষা করা যায়। আর বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হলে লাখ লাখ এরেস্টার স্থাপন করতে হবে।আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, বিমানবাহিনীর রাডার ব্যবহার করে সফটওয়ার ও আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের মাধ্যমে দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগেই বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব।তিনি আরো বলেন, যে পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষকে বাঁচানো সম্ভব সেটা হলো বিমানবাহিনীর রাডার ব্যবহার করে সফটওয়ার ও আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের মাধ্যম চালু করা। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর রাডারের সফটওয়ার ব্যবহার করে প্রথম যে বজ্রপাতটা হবে তার লক্ষ্য ঠিক করবে, সরাসরি ওই এলাকায় মোবাইলে তথ্য চলে যাবে, আপনি সাবধান হয়ে যান। প্রতি ৫ মিনিট পর পর একটি চিত্র দেবে কোথায় বজ্রপাত হচ্ছে। ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পূর্বে বাতাসের গতিবেগ দেখে বোঝা যাবে বজ্রপাতটা কোনদিকে যাবে।   বজ্রপাত প্রতিরোধের পাশাপাশি জলাভূমি রক্ষা এবং পরিবেশ ধ্বংস ঠেকাতে যথাযথ পরিকল্পনা নেয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

Share.