তিন্নির মৃত্যুর ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ৪

0

ঢাকা অফিস: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী উলফাত আরা তিন্নির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার রাতে নিহত তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তিন্নি উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর মেয়ে।শৈলকুপা থানার ওসি (তদন্ত) মহসিন হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পড়ালেখা শেষ করা মেধাবী ছাত্রী তিন্নির মৃত্যুতে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। পরে তারা অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের কনুর উদ্দিনের ছেলে আমিরুল, খলিল শেখের ছেলে নাইম ও লাবিবসহ ৪ জনকে আটক করেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি জামিরুল এখনও পলাতক রয়েছে বলেও জানান তিনি।এর আগে, তার বড় বোনের প্রাক্তন স্বামীর নির্যাতনের কারণে তিন্নি আত্মহত্যা করে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।তিন্নির খালাতো ভাই মখলেসুর রহমান জানান, তাদের বাড়ি ছিল একই উপজেলার যুগিপাড়া গ্রামে। পরে তার বাবা শেখপাড়া বাজারের পাশে বাড়ি করেন। তিন্নির মেঝ বোন মুন্নীর সাথে বিয়ে হয় শেখপাড়ার জামিরুল ইসলামের সাথে। বিয়ের পর জামিরুল ঘর জামাই থাকতেন। গত বছর মুন্নীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। মুন্নী পরে বিয়ে করে বাবার বাড়িতেই থাকেন। বিচ্ছেদের পর আবারো স্ত্রীকে নিয়ে যেতে প্রায়ই চাপ দিয়ে আসছিল মুন্নীর প্রাক্তণ স্বামী জামিরুল। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে জামিরুল লোকজন নিয়ে আবারো বাড়িতে আসে। এসময় তারা ঘরে ভাংচুর করে। এসময় তিন্নি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছিল। ভাংচুরের সময় বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে জামিরুল ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর তিন্নির কোন সাড়া না পেয়ে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে তার রুম ভেতর থেকে লাগানো দেখে দরজা ভেঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকে তিন্নিকে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।তিন্নীর মা হালিমা বেগম অভিযোগ করেন বলেন, আমার মেয়ে খুবই মেধাবী। বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিল। ঘটনার দিন সে সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া থেকে এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জামিরুলের হুমকির শিকার হয় তিন্নি। আমাদের সন্দেহ তিন্নিকে পাশবিক নির্যাতনের কারণেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।এ ব্যাপারে ঝিনাইদহে সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) আরিফুল ইসলাম বলেন, তিন্নির মৃত্যুটি রহস্যে ঘেরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই বিস্তারিত জানা যাবে।

Share.