দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের ভিসা বন্ধ করলো চীন

0

ডেস্ক রিপোর্ট: চীনে কোভিড পরস্থিতি ভয়ানক আকার ধারন করায় দেশটির নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। তার জবাবে এবার চীন দেশ দুইটির নাগরিকদের স্বল্পমেয়াদী ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছে। বিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিউলে বেইজিংয়ের দূতাবাস জানিয়েছে, পর্যটক হিসেবে চীনে প্রবেশকারী দক্ষিণ কোরিয়ানদের ভিসা স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাপানি মিডিয়া জানিয়েছে, চীন তাদের ওপরেও অনুরূপ ব্যবস্থা আরোপ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি টিট-ফর-ট্যাট পদক্ষেপ যা বেইজিং বলেছে যতক্ষণ না চীনের বিরুদ্ধে ‘বৈষম্যমূলক’ প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তা বহাল থাকবে। গত সপ্তাহে, দক্ষিণ কোরিয়া চীন থেকে আগতদের জন্য পর্যটন ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, যাকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে অভিহিত করেছে। চীনের সর্বশেষ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবিসিকে বলেছে, চীন থেকে আগমনের বিষয়ে তাদের নীতি ‘বৈজ্ঞানিক ও বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ অনুসারে’ গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে জাপান বর্তমানে চীনা ভ্রমণকারীদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। শর্ত একটাই, কোভিড নেগেটিভের পরীক্ষা দিতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি অনুসারে, ভিসা বিধিনিষেধ জারি হওয়ার আগে চীন থেকে আগত প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষের করোনা পজিটিভ ছিল। সিউলের ইনচিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি একমাত্র দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবন্দর হিসেবে এখনও চীন থেকে ফ্লাইট আসার অনুমতি দিচ্ছে। বিমান বন্দরটির কর্তৃপক্ষ ভ্রমণকারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সামরিক কর্মীদের মাধ্যমে প্রদান করছে। তবে এ ধরণের পদক্ষেপের মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। কেউ কেউ এর পক্ষে আবার কেউ কেউ এতে মোটেও সন্তুষ্ট নয়। অনেক দক্ষিণ কোরিয়ান তাদের দেশকে চীনের করোনভাইরাস ঢেউ থেকে রক্ষা করার ধারণাকে সমর্থন করে, তবে সবাই নিশ্চিত নয় যে সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণরূপে বৈজ্ঞানিক কিনা। একজন যাত্রী বলেছেন, ‘এটির একটি রাজনৈতিক উপাদান রয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। অনেক কোরিয়ান মানুষ করোনাভাইরাসের জন্য চীনকে দায়ী করে অনেক শত্রুতা পোষণ করে।’ দক্ষিণ কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞাগুলি কমপক্ষে মাসের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার কথা, যা বিজ্ঞানীদের চীন থেকে আসা সম্ভাব্য নতুন রূপগুলি বিশ্লেষণ করার জন্য সময় দেবে। কোরিয়া ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কিম উ জু বলেন, ‘এই মুহূর্তে চীনে নতুন ভেরিয়েন্টের জন্য পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কোনো স্বচ্ছতা নেই। যদি চীন থেকে কোনো নতুন ভেরিয়েন্ট আসে, তাহলে তা সমগ্র বিশ্বের জন্য খুবই কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি কোরিয়ান স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জন্যও একটি বিপর্যয় হবে। বর্তমানে আমাদের অনেকে হাসপাতালে ভর্তি এবং অনেকে মারাও গিয়েছে। এমনকি আমাদের বয়স্ক ব্যক্তিরাও কম টিকা নিচ্ছেন। এটি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’ এই মুহুর্তে, চীনের অল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী বা কূটনৈতিকদের দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের অবশ্যই প্রস্থানের আগে এবং আগমনের সময় নেতিবাচক পরীক্ষা করতে হবে।

Share.