ঢাকা অফিস: ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন ইলিয়াস হোসেন নামের এক সংগীতশিল্পী।রোববার (১৮ এপ্রিল) মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।মামলায় নুরুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগ করা হয়। একই অভিযোগে রোববার শাহাবাগ থানায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম সজীবও নুরুর বিরুদ্ধে মামলা করেন।পল্টনে দায়ের করা মামলার এজহারে বলা হয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল নুরুল হক তার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে বক্তব্য দেন। এতে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানে এমন আপত্তিকর, আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন তিনি। ইলিয়াস হোসেনের অভিযোগ, নুরুল হকের এই বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান কর্মী-সমর্থকদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত হানে। নুরুল হকের বক্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও শ্রেণির মধ্যে শত্রুতা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।এর আগে একই অভিযোগে রোববার শাহাবাগ থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, বুধবার ফেসবুক লাইভে এসে নূর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকরা প্রকৃত মুসলমান নয়। প্রকৃত কোনো মুসলমান আওয়ামী লীগ করতে পারে না।’ নুরের এমন বক্তব্যে আওয়ামী সমর্থন করা মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হেনেছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করার আবেদন করা হয়েছে।মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, লাইভে নুর আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ‘চাঁদাবাজ’, ‘মাদক চোরাকারবারি’, ‘ধোঁকাবাজ’, ‘বাটপার’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) সপ্তাহে একদিন নামাজ পড়েন, কিন্তু কখনও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন না। তারা ঘুষ নেয়, চাঁদাবাজি করে, মাদক চোরাচালান করে এবং টেন্ডার ব্যবসা করে। আবার নিজেদের মুসলমান দাবি করে। কোনো মুসলমান আওয়ামী লীগের সমর্থন করতে পারে না। যারা আওয়ামী লীগ সমর্থন করে, তারা প্রকৃত মুসলমান নয়।’এদিকে মামলা হওয়ার পর নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।রোববার (১৮ এপ্রিল) মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষমা চান তিনি। এ সময় ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে অবশ্যই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আছেন, হিন্দু-খ্রিস্টান ভাইবোনরা আছেন। আমি আওয়ামী লীগের বা আওয়ামী সমর্থকদের ঢালাওভাবে আক্রমণ করে কোনো কথা বলিনি।তিনি আরও বলেন, আমার লাইভের বক্তব্যের জন্য কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। স্বাভাবিকভাবে আমার যদি ভুল হয় আমার জায়গা থেকে ১০০ বার ক্ষমাপ্রার্থী থাকব। আমার ভুল হতেই পারে, আমি মানুষ, ফেরেশতা না। মামলা হওয়ার পর ফেসবুক লাইভ ডিলেট করে দেওয়া প্রসঙ্গে নুরু বলেন, আমি সানন্দে অনেকের পরামর্শ গ্রহণ করি। আমাকে অনেকে বলেছেন, গত ১৬ মার্চের লাইভে যা বলেছি একজন নেতৃত্বশীল জায়গা থেকে আমাকে একটু সহনশীল হতে হবে। এমনকি শত্রুপক্ষকে আক্রমণ করে কোনো কথা বলা আমার জায়গা থেকে কাম্য নয়।…তাই আমি আমার ফেইসবুক পোস্ট লাইভ ডিলিট করে দিয়েছি।
নুরুর বিরুদ্ধে সংগীতশিল্পীর ডিজিটাল আইনে মামলা
0
Share.