পদ্মায় ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল

0

ঢাকা অফিস: পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর এলাকা থেকে এক জেলের মাছ ধরার ফাঁদে আটকে গেছে বিরল প্রজাতির একটি ঘড়িয়াল। যদিও স্থানীয়রা সেটাকে কুমির ভেবে ভিড় করেছে তা দেখার জন্য। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে ধরা পড়ে মিঠাপানির বিরল প্রজাতির বিপন্ন প্রায় এ প্রাণীটি।  জানা গেছে, পাংশার হাবাসপুর এলাকায় বাদশা সরদার নামে এক মাছশিকারির জালে ধরা পড়ে চার ফুট আট ইঞ্চি লম্বা ঘড়িয়ালটি।  শৌখিন মাছশিকারি বাদশা সরদার বলেন, বাড়ির পাশেই নদীতে শখ করে নেট দিয়ে তিনটি দুয়াড়ি তৈরি করেছি। বড় মাছ মনে করে দুয়াড়ি পানি থেকে ওপরে তুলতেই দেখি কুমির। এটি দেখার জন্য প্রচুর লোকজন ভিড় করে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় কুমিরটি উপজেলা প্রশাসনের কাছে দিই। এটি মেছো কুমির ও ঘট কুমির নামেও পরিচিত। প্রধান খাদ্য মাছ বলেই অনেকেই মেছো কুমির বলে। বাংলাদেশে পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র এবং এগুলোর শাখা-প্রশাখায় একসময় প্রচুর দেখা যেত। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে প্রজননক্ষম কোনো ঘড়িয়াল প্রকৃতিতে নেই বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ঘড়িয়াল মহাবিপন্ন প্রাণী। ওই ঘড়িয়ালটি গত বুধবার বিকালে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে সাফারি পার্কে ঘড়িয়ালটি প্রদর্শনের জন্য অবমুক্ত করা হয়। রাজবাড়ী জেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর স্থানীয় মধু সরদারের ছেলে বাদশা সরদার বড় আকারে দুয়ারী (মাছ শিকারের যন্ত্র) নদীর তীরবর্তী এলাকায় ডুবিয়ে রেখে মাছ শিকার করে আসছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে তিনি দুয়ারী তুলতে গিয়ে দেখেন তার মধ্যে মাছের পরিবর্তে প্রায় চার ফুট লম্বা একটা কুমির আকৃতির বস্তু আটকে আছে। যে কারণে তিনি ভয় পেয়ে যান এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রশি বেঁধে টেনে দুয়ারীটি ডাঙ্গায় তুলে আনেন। এদিকে তার দুয়ারীতে কুমির ধরা পড়েছে বলে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তা দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন। পরবর্তীতে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের তত্বাবধানে সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা কবির হোসেন, অফিস সহকারী খন্দকার রাহাতসহ হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং তারা গিয়ে দেখতে পান এটা কুমির নয়, এটা বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় একটি ঘড়িয়াল। যে কারণে তারা ঘড়িয়ালটি উদ্ধার করে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একই সঙ্গে তারা ঘড়িয়ালটি একটি পানি ভর্তি ড্রামের মধ্যে রেখে তা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যোগে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যান।  সেখানে আসা গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কর্তৃপক্ষের কাছে ঘড়িয়ালটি হস্তান্তর করেন। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ঢাকা বন্যপ্রাণী ইউনিটের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আস সাদিক বলেন, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আরও তিনটি ঘড়িয়াল আছে। সেগুলোর সঙ্গেই এটিকে রাখা হবে।

Share.