পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলাকারীর ছিন্ন মাথা উদ্ধার

0

ডেস্ক রিপোর্ট: পাকিস্তানের পেশোয়ারে মুসল্লিভর্তী একটি মসজীদে ভয়ানক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে ২২১ জন। সোমবার যোহরের নামাজের সময় চালানো এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি)। মঙ্গলবার হামলাকারীর ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে। সোমবার দুপুর ১.৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ লাইনস এলাকার মসজিদের ভেতরে শক্তিশালী বিস্ফোরণটি ঘটে। এ সময় মসজীদে মুসল্লি থাকার পাশাপাশি এই এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী স্কোয়াডের কর্মীরা ছিল। সামনের সারিতে থাকা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়, যার ফলে ছাদটি লোকেদের ওপর ভেঙে পড়ে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ অফিসার (সিসিপিও) পেশোয়ার মোহাম্মদ আইজাজ খান জিও টিভিকে বলেছেন, বিস্ফোরণটি একটি আত্মঘাতী হামলা বলে মনে হচ্ছে এবং সন্দেহভাজন বোমারু হামলাকারীর মাথাটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভবত হামলাকারী বিস্ফোরণের আগে থেকেই পুলিশ লাইনে উপস্থিত ছিল এবং সে হয়ত (প্রবেশ করার জন্য) একটি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছে। উদ্ধার অভিযান শেষ হলেই বিস্ফোরণের সঠিক প্রকৃতি জানা যাবে।’ খাইবার পাখতুনখোয়ার তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ আজম খান মঙ্গলবার এই হামলার পর প্রদেশে এক দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। পাকিস্তানি তালেবান নামে পরিচিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, গত আগস্টে আফগানিস্তানে নিহত হওয়া টিটিপি কমান্ডার উমর খালিদ খুরাসানির প্রতিশোধমূলক হামলার অংশ এটি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, মসজিদের একটি অংশ ধসে পড়েছে এবং বেশ কয়েকজন এর নিচে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৭ সালে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী সংগঠনের একটি ছাতা গোষ্ঠী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় টিটিপি। সংগঠনটি ফেডারেল সরকারের সাথে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করে এবং তার সন্ত্রাসীদের সারা দেশে হামলা চালানোর নির্দেশ দেয়। আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা এই দলটিকে পাকিস্তান জুড়ে বেশ কয়েকটি মারাত্মক হামলার জন্য দায়ী করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০০৯ সালে সেনা সদর দপ্তরে হামলা, সামরিক ঘাঁটিতে হামলা এবং ২০০৮ সালে ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা হামলা অন্যতম। ২০১৪ সালে পাকিস্তানি তালেবানরা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে (এপিএস) আক্রমণ করেছিল। হামলায় ১৩১ ছাত্রসহ কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়। এই হামলা বিশ্বজুড়ে শোকের ঢেউ তোলে এবং ব্যাপকভাবে নিন্দার মুখে পড়ে।

Share.