পেশা নিয়ে বিষণ্নতায় ভুগছেন সাংবাদিক

0

ঢাকা অফিস: একটা সময় তরুণ-তরুণীদের স্বপ্নের পেশা ছিল সাংবাদিকতা। সাহসী ও চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকেই বেছে নিতেন তারা। পড়াশোনা শেষে যারা এই পেশায় এসেছেন, তাদের অনেকেই এই পেশা ছেড়েছেন, আর যারা আছেন, তাদের কেউ কেউ ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন। সুযোগ পেলেই অন্য কোনও চাকরিতে চলে যাচ্ছেন তারা। বাংলাদেশের ৪২.০৯ শতাংশ সাংবাদিকই তার পেশা নিয়ে বিষণ্নতায় ভুগছেন। আর ৭১.০৭ শতাংশ সাংবাদিক এ পেশা ছেড়ে দিতে চান। সম্প্রতি দেশের সংবাদপত্র, স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে সম্প্রতি ‘অ্যান ইনভেস্টিগেশন ইনটু রিস্ক টু মেন্টাল হেলথ অব বাংলাদেশি জার্নালিস্টস’ শীর্ষক এ গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষক দলে আরও ছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক ড. সরকার বারবাক কারমাল ও সাবেক শিক্ষার্থী আপন দাস। সাংবাদিকদের এমন বিষণ্নতা আর চাকরিবিমুখতার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে চাকরির অনিশ্চয়তা। যার হার ৮৫ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে সময়মতো প্রমোশন না পাওয়া, কম বেতন এবং অত্যাধিক কাজের চাপ। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৯১ জন সাংবাদিকের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের ৭৯.১ শতাংশই নিজের পেশা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আর বিষণ্নতায় ভুগছেন ৪২.৯ শতাংশ সাংবাদিক। তাদের মধ্যে নারী ৪৮.৪৮ আর পুরুষ ৪১.৭৭ শতাংশ। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সাব-এডিটর বা কপি এডিটরদের থেকে বাইরে কাজ করা রিপোর্টারদের মধ্যে বিষণ্নতা বেশি। তবে রিপোর্টার ও সাব-এডিটরের থেকে নিউজ এডিটর তুলনামূলকভাবে কম বিষণ্নতায় ভোগেন। এ হারে রিপোর্টার ৪৪.৩২, কপি এডিটর ৩৪ এবং নিউজ এডিটর ২৮.৫৭ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে গবেষক দলের প্রধান আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সাংবাদিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ নিয়ে দেশে সচেতনতার মাত্রা খুবই কম। সাংবাদিকতা পেশা ও সাংবাদিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রশ্নে কর্মক্ষেত্রে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি অবশ্যই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। সংসদে দেওয়া তথ্যমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন দৈনিক পত্রিকা রয়েছে এক হাজার ২৪৮টি, এরমধ্যে ঢাকায় ৫০২টি এবং সারাদেশে ৭৪৬টি। টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে ৩২টি। এছাড়া সারাদেশে সাপ্তাহিক পত্রিকা রয়েছে এক হাজার ১৯২টি, মাসিক ৪১৪টি। এর বাইরে ২ হাজার ২১৭টি অনলাইন মিডিয়া রয়েছে। আরও আছে, অনলাইন পত্রিকা, অনলাইন টেলিভিশন ও রেডিও।

Share.