ঢাকা অফিস: বাংলাদেশে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যবসায়িক ইনকিউবেটর ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (৬ জুলাই) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্থাপিত এ ইনকিউবেটরের উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর সেন্টারে নির্মিত মাল্টিপারপাস হল, শেখ জামাল ডরমেটরি ও রোজী জামাল ডরমেটরিরও উদ্বোধন করেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। চুয়েট প্রান্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চুয়েট ভিসি, চুয়েট আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্প পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চুয়েট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রায় ৫ একর জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে- স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, এক্সিবিশন/প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি। উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধাও থাকছে। অন্যদিকে মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক আটটি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের চার তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি (একটি নারী ও একটি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং জ্ঞানভিত্তিক কোম্পানি গড়ে তুলতে বিশ্বের স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বিজনেস ইনকিউবেটর থাকলেও বাংলাদেশে তা এবারই প্রথম। চুয়েটের এ উদ্যোগটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ ধরনের বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এরমধ্যে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণের যে অঙ্গীকার, সেটি বাস্তবায়নে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের মতো অবকাঠামো অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। আগামীর তরুণ প্রজন্মের মেধা, বুদ্ধি ও জ্ঞানের বিকাশকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের পরিচালক এবং চুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম মশিউল হক বলেন, এ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে। উদ্যোক্তা এবং ব্যবসার জন্য সম্পূর্ণ ইকো-সিস্টেম রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পগুলোকে কীভাবে বাস্তব প্রকল্প এবং পণ্যে রূপ দেওয়া যায় আমরা সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশে প্রথম ক্যাম্পাস-ভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
0
Share.