বিবস্ত্র করে নির্যাতন: বিক্ষোভে উত্তাল শাহবাগ

0

ঢাকা অফিস: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বর্বর নির্যাতনের ঘটনাসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদ ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা এসব ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ অপরাধ দমনে ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান।সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা এবং দুপুর ১২টায় আলাদা আলাদা কর্মসূচিতে সংগঠন দুটি এসব দাবি জানিয়ে সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ করেছে। একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে ধর্ষণবিরোধী সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এসময় শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত হলে মিছিল সহকারে জাদুঘর থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা। শাহবাগে অবস্থান করলেও কোনো যান আটকে ছিল না৷ গাড়ি চলাচলের জায়গা করে দিয়েছেন তারা৷ শাহবাগে অবস্থান নিয়ে তারা ‘যে রাষ্ট্র ধর্ষক পোষে সে রাষ্ট্র চাই না’ ‘পাহাড়ে কিংবা সমতলে লড়াই হবে সমান তালে’সহ ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এছাড়া ‘নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ আজ বাংলাদেশের লজ্জা’, ‘বিবস্ত্র স্বদেশ’ , ‘জাস্টিস ডিলেইঢ জাস্টিস ডিনেইড’, ‘ধর্ষকদের জননী আপনার আব্রু ঠিক আছে ত?’ এ ধরনের নানা প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

সভায় সংহতি জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলিরা জামান বলেন, ‘আপনারা যে আজ নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, ধর্ষণের প্রতিবাদ করছেন আমি মনে করি যারা সিভিল সোসাইটির সদস্য তাদের উচিত আপনাদের পাশে এসে দাঁড়ানো। সিভিল সোসাইটি আসলে জনগণ এবং সরকারের মাঝে একটা সেতু তৈরি করে। তারা সরকারকে অবহিত করে জনগণ আসলে কী চাচ্ছে। কিন্তু এখানে সিভিল সোসাইটির ভূমিকা আমি দেখতে পাচ্ছি না। আর যারা এতদিন নারী সংহতির জন্য কাজ করছেন বলে দাবি করেন তাদেরকেও আমি এখানে দেখতে পাচ্ছি না। এগুলো হলো আমাদের জন্য দুঃখের বিষয়। আমি অত্যন্ত প্রবীণ একজন মহিলা। আপনাদের সাথে আমার এই সংহতি প্রকাশ জানি না কোনো কাজে আসবে কি না। কিন্তু নিজের শান্তির জন্য, সন্তুষ্টির জন্য আমি এখানে এসেছি।’দিলারা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভোট দেয়ার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। যখন নিজেদের ইচ্ছা মতো সরকার গঠন করতে পারে না তখন জনগণ অসহায় হয়ে পড়ে। বিচার বিভাগকে আজ এমনভাবে নষ্ট করা হয়েছে যেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷ যে রাষ্ট্র নারীকে নিরাপত্তা দিতে পারে না সে রাষ্ট্র উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বলে বিশ্বাস করি না।’

সমাবেশে উপস্থিত ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দি বলেন, ‘ধর্ষণ যতটা না জৈবিক বিকার তার চেয়ে বেশি ক্ষমতার প্রদর্শন। সেটারই নমুনা দেখেছি ২০১৮ সালে সুবর্ণচরের ঘটনায়, সিলেটের এমসি কলেজ এবং পাহাড়ের ঘটনায়। এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘আজ সারা বাংলাদেশ ধর্ষিত হয়েছে৷ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ দ্বারা অব্যাহত ধর্ষণ সংগঠিত হচ্ছে আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব রুখতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আমরা এই ব্যর্থ মন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।’ শাহবাগে কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর বিকাল চারটা থেকে লাঠি মিছিল শুরু করে সংগঠনটি। মিছিলটি ক্যামবপাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Share.