বড়াইগ্রামে ১৮ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আইনুল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষণা, ২ জনের ফাঁসির আদেশ

0

 বাংলাদেশ থেকে নাটোর  জেলা প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১৮ বছর পর নাটোরের বড়াইগ্রামের আলোচিত তৎকালীন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা. আইনুল হক হত্যা মামলায় দুই জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।  সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই মামলায় দুই জনের ফাঁসি ও ১১ জনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেন। ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌর শহরের মৃত পলান মোল্লার ছেলে শামীম মোল্লা (৫০) ও একই এলাকার মৃত বাহারউদ্দিন মোল্লার ছেলে তোরাপ মোল্লা (৫২)। এরা দুইজন থানা যুবদলের সাবেক নেতা। এ মামলার প্রধান আসামী সহ অন্যতম আরও ৪ আসামী যথাক্রমে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাহেরউদ্দিন মোল্লা, যুবদল কর্মী আলামুদ্দিন মোল্লা, জিয়াউল হক সেন্টু ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। যার ফলে এ মামলার মোট ১৭ জন আসামীর মধ্যে ১৩ জনের বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।    জানা যায়, বনপাড়া পৌর শহরের (তৎকালীন মাঝগাঁও ইউনিয়নের) মহিষভাঙ্গা এলাকার মৃত টিনু উদ্দিন কবিরাজের ছেলে ও বর্তমান বনপাড়া পৌরসভার মেয়র এবং পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি কেএম জাকির হোসেনের পিতা মুক্তিযোদ্ধা ডা. আইনুল হক ২০০২ সালের ২৯ মার্চ তারিখে বিএনপি’র সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে খুন হন। একই দিনে ডা. আইনুলের অনুসারী মহিষভাঙ্গা, কালিকাপুর, দিয়ারপাড়া, বনপাড়া, নটাবাড়িয়া, রাথুরিয়া ও আটুয়া গ্রামের শতাধিক আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘর পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় ডা. আইনুলের পুত্রবধু ও মেয়র পতœী নাজমা রহমান বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মুক্তিযোদ্ধা ডা. আইনুলের ছেলে পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন জানান, আমার নির্দোষ পিতাকে বনপাড়াস্থ তার চিকিৎসার চেম্বার থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে আসামীরা। আমাদের তিন ভাইকে পিতার কবরে মাটিও দিতে দেয়নি ওই সন্ত্রাসীরা। একই দিনে সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় শতাধিক ঘর-বাড়ি। এমন একটি নৃশংশ ও লোমহর্ষক ঘটনার বিচারের এই রায়ে আমাদের পরিবারের সদস্যরা, ক্ষতিগ্রস্থরা এবং সর্বপরি উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে।

Share.